ব্রায়ান লারা যখন আফগানিস্তানকে সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, তখন অনেকেই হয়তো মুখ বিস্ফারিত করে ভ্রু কুঁচকেছিলেন। আফগানিস্তানকে তাচ্ছিল্য করে ভ্রু কুঁচকেছিলেন সম্ভবত এই ভেবে যে, ২০১৭ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়া দলটি কীভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা চারে খেলবে!
যারা ‘ভ্রু কুঁচকানো’ দলে ছিলেন, তাদের এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পারা উচিত। ব্রায়ান লারার ভবিষ্যদ্বাণী যে অসম্ভব কিছু নয়, তা এখন জলের মতোই স্পষ্ট। রশিদ খানের নেতৃত্বাধীন দলটি দারুণ পারফরম্যান্স করছে এই আসরে। ইতোমধ্যে সুপার এইট নিশ্চিত করেছে তারা, গ্রুপপর্বের আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচটি বাদ দিলে সেমিফাইনাল থেকে এখন মাত্র তিন ধাপ দূরে তারা।
এই আসরটা আফগানিস্তানের জন্য এখন পর্যন্ত স্বপ্নের মতোই। তিন ম্যাচ খেলে তিনটিতেই জয় পেয়েছে তারা। উগান্ডার বিপক্ষে ১২৫ রানের বড় জয়ে শুরু, দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৭৫ রানে অলআউট করে ৮৪ রানের জয়। তৃতীয় ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়েছে ৭ উইকেটে। এর মাধ্যমে ২০১৬ সালের পারফরম্যান্সকে পুনরায় স্পর্শ করেছে আফগানিস্তান। ভারতে অনুষ্ঠিত ওই আসরেও প্রথম তিন ম্যাচে জয় পেয়েছিল তারা।
এবারের আসরে তিন জয়ে আফগানিস্তানের নেট রানরেট এখন +৪.২৩০, যা ২০ দলের মধ্যে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেট রানরেট ‘বি’ গ্রুপে থাকা অস্ট্রেলিয়ার (+৩.৫৮০)।
‘স্বপ্নের মতো’ আসরে আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও উজ্জ্বল। ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক, তিন ম্যাচে ১৫৪.৬৩ স্ট্রাইকরেটে এই ডানহাতি করেছেন ১৬৭ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪১ রান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারন জোনস। ফজলহক ফারুকী সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। একটি ফাইফার ও একটি ফোরফারসহ তিন ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৮ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন প্রোটিয়া পেসার এনরিখ নর্কিয়া।
সেমিফাইনালে খেলতে হলে আফগানিস্তানকে সুপার এইটের ১ নম্বর গ্রুপের শীর্ষ দুইয়ে থাকতে হবে। এই গ্রুপে ইতোমধ্যে তারা সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে, আরেকটি দল আসবে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে। সুপার এইটে প্রতিটি দল খেলবে তিনটি করে ম্যাচ।
আফগানিস্তান কি লারার ভবিষ্যদ্বাণীকে সত্যে পরিণত করতে পারবে?