ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কর্তৃক পরিচালিত পাবলিক সার্ভিস কমিশন ৪৩তম বিসিএসের নিয়োগ প্রজ্ঞাপন বাতিল করার পাশাপাশি ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার সব প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে ৮০৩ জন এবং ৬৭ জন এএসপি নিয়োগও বাতিলের আহ্বান করেছে।
“বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অতীতে একই প্রেক্ষাপটে ২৭তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল বাতিল করা এবং পুনরায় মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করার নজির রয়েছে।”
সালাহউদ্দিন বলেন, “পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী পাবলিক সার্ভিস কমিশন দলীয় বিবেচনায় ৪৩তম বিসিএসের ২০৬৪ প্রার্থীকে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই সিদ্ধান্ত দেশের মানুষের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “যেখানে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছে, সেখানে ৪৩তম বিসিএসের মাধ্যমে সেই সংগঠনের সদস্যদের সরকারি প্রশাসনের উচ্চতর পদে পুনর্বাসন করার সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি।”
সালাহউদ্দিন বলেন, “এই নিয়োগের মাধ্যমে প্রশাসনে আওয়ামী দলের প্রভাব বিস্তৃত করার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, এটি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে বেঈমানী।”
তিনি আরো বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সরকারের সময়ে ৪৪তম বিসিএসের ৯০০০ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছে, এর মধ্যে ৩০০০ জনের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত উত্তরপত্রের মূল্যায়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে এবং ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা তিন মাস আগে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি, এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হোক।”
সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার পুলিশ প্রশাসনে ৮০৩ জন সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগ দিয়েছে, এর মধ্যে ২০০ জন গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এবং ৪০৩ জন ছাত্রলীগের সদস্য। এই নিয়োগের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের আরও বহু দোসর তৈরি হবে।”
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নতুন চাকরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আমরা চাই, যারা আবেদন করেছেন তাদের জন্য আবেদন সময়সীমা বাড়ানো হোক এবং নতুন করে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হোক।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে অধিষ্ঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। আওয়ামী দলের পিএসসির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে আমরা জাতির সামনে তুলে ধরছি যাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব ধরনের প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকে।”