বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে, এই সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল গ্রহণ করেছেন আদালত। সোমবার আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ প্রদান করেন।
এর আগে, খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে দেওয়া এই সাজার বিষয়ে আপিলের অনুমতি চেয়ে পৃথক দুটি আবেদন করেছিলেন। রায়ের বিরুদ্ধে এই লিভ টু আপিলের শুনানির দিন ধার্য করার পর শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য সোমবার দিন নির্ধারণ করেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড প্রদান করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে, হাইকোর্ট সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এরপর, ২০১৯ সালে খালেদা জিয়া আপিল বিভাগের কাছে পৃথক লিভ টু আপিল করেন।
গত ৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার এ লিভ টু আপিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন শুনানি শেষে আদালত আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন। এরপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
খালেদা জিয়ার পক্ষে এই শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এবং কায়সার কামাল। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
শুনানিতে, বিচারিক আদালতের রায় একতরফা দাবি করে জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচারিক আদালত ৫ বছর সাজা দিলেও হাইকোর্ট তা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন, যা তিনি উপস্থাপন করতে চান। এরপর কায়সার কামাল হাইকোর্টের রায়ের কিছু অংশ তুলে ধরেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র এবং বিচারিক আদালতের রায়ের কিছু অংশ তুলে ধরে বলেন, “এখানে কোনো আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি, বরং ফান্ড স্থানান্তরিত হয়েছে এবং টাকা অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে।” এছাড়া, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান খালেদা জিয়ার ৩৪২ ধারায় দেওয়া বক্তব্য উল্লেখ করেন।
পরে জয়নুল আবেদীন কিছু যুক্তি তুলে ধরে বলেন, হাইকোর্টের এই সাজা বাড়ানোর রায়ে আইনগত ত্রুটি রয়েছে। শুনানি শেষে আদালত সোমবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।