ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকেই বিএনপি সতর্ক রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা সহিংসতা, দখলবাজি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, এবং যে কোনো ধরনের অপকর্ম বন্ধ করতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, কোনো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি বা সহিংসতা সহ্য করা হবে না। বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী বা দুষ্কৃতকারীর স্থান নেই এবং কেউ চাঁদাবাজি করলে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।
বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো ইতিমধ্যেই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। গতকাল বিকেলেই ভারতে দীর্ঘদিন নির্বাসিত থাকা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকনকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বিভাগীয় মতবিনিময় সভাগুলোয় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বিএনপির শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর নির্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, বিএনপিতে কোনো দুষ্কৃতকারীর ঠাঁই হবে না এবং দলকে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি নেতা-কর্মীদের জনগণের আস্থা এবং ভালোবাসা অর্জন করে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তারেক রহমান বলেছেন, যারা বিএনপির নাম ব্যবহার করে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে চাইছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে। এছাড়া, সম্প্রতি বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ২০০-এর অধিক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বহু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে। বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত তিন সপ্তাহে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলের তৃণমূল থেকে শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে পদ স্থগিত করার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, দলের অভ্যন্তরে কোনো অনিয়ম বরদাশত করা হবে না এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদও বলেন, বিএনপিতে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি সহ্য করা হবে না এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।