বাংলাদেশে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভাত, পোলাও, খিচুড়ি, বিরিয়ানি, এবং ফ্রাইড রাইসের মতো চাল দিয়ে তৈরি খাবারের উপস্থিতি বেশ উল্লেখযোগ্য। তাই খাওয়ার পরে বেঁচে যাওয়া ভাত সাধারণত ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। তবে অনেকেই জানেন না যে, ভাত সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে তা খাদ্যজনিত অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রান্না করা ভাত দ্রুত ঠান্ডা করে, বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে, এবং এটি ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে তাপমাত্রায় রাখতে হবে। এছাড়াও খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে গরম করতে হবে। এভাবে সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করলে ব্যাকটেরিয়া দূষণ এড়ানো সম্ভব।
ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) এর মতে, রান্না করা ভাত ২৪ ঘণ্টার বেশি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা উচিত নয়। এবং একবারের বেশি ভাত গরম করাও নিরাপদ নয়। এর বেশি সময় রাখলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
রান্না না করা চালে ব্যাসিলাস সেরিয়াসের নামক ব্যাকটেরিয়ার স্পোর থাকতে পারে। ভাত রান্নার পরও এই ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে এবং ঘরের তাপমাত্রায় ভাত রাখলে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হওয়া টক্সিন খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে, যা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ব্যাসিলাস সেরিয়াস ব্যাকটেরিয়ার কারণে তৈরি হওয়া খাদ্য বিষক্রিয়াকে সাধারণত “ফ্রাইড রাইস সিন্ড্রোম” বলা হয়। এটি মূলত ভাতে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি এবং টক্সিন নির্গত করার মাধ্যমে ঘটে।
বাদামী এবং সাদা চাল উভয় ধরনের ভাতেই ব্যাসিলাস সেরিয়াস স্পোর থাকতে পারে। এছাড়া, ভাতে ছত্রাক জন্মাতে পারে, যা কালো, সবুজ বা সাদা পাউডারের মতো দেখা যায়। এই ধরনের ছত্রাক, বিশেষ করে Aspergillus oryzae, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার কারণ হতে পারে।
সতর্কতার সাথে ভাত সংরক্ষণ ও খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে খাদ্যজনিত অসুস্থতা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।