উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ফলে গত তিনদিনে ঘরের ভিতরে মানুষরা আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে রান্না-বান্না করছেন এবং রাতগভীরে তাদের জীবন চলছে চৌকিতে। বাড়ির চারপাশে পানিতে অসহায় দিন কাটছে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী মানুষের।
উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবা গ্রামের আসমত ও নুরবানু বলেন, গত তিনদিনে পানিবন্দী অবস্থায় থাকছেন। তাঁরা ছেলে মেয়েকে উঁচু জায়গায় রেখে গরু-ছাগল পাহারা দিচ্ছেন। এখনো কেউ খোঁজখবর নিতে আসেনি।
উলিপুর ইউনিয়নের ফকিরের চর গ্রামের রমিচন বলেন, বাড়িতে পানি উঠে আসছে। রান্না করতে সমস্যা হচ্ছে এবং গরুকেও খাওয়া দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। বাচ্চারা খুব কাঁটাকাটি করছেন।
আবার একই গ্রামের ফরিদা জানান, চারটা ঘরে ভাত ফুটাচ্ছেন, তারকারি কিছু নেই, শুধু লবন দিয়ে খাবেন।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর জানান, আমার ইউনিয়নে ১৫শ’ বাড়িঘর পানিবন্দী হয়ে গেছে। এছাড়াও ৮ হাজার মানুষের জীবন এখন অস্তত হয়েছে পানিবন্দী অবস্থায়।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হামিদ শেখ জানান, আমার ওয়ার্ডে দেড়শটি ঘরে পানি উঠেছে। এছাড়াও এই ইউনিয়নে প্রায় ৮শ’ পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছে। ফকিরের চরে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৮০টি পরিবার আশ্রয় নিলেও তারা বিশুদ্ধ পানি ও ল্যাটিন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান জানান, আমি এই সমস্যা সম্পর্কে জানলাম এবং এখন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে লোকজনকে সমাধানের দিকে প্রেরণ করছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ জানান, বন্যা কবলিত কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, উলিপুর ও নাগেশ্বরীতে খোঁজখবর চলছে। এর পাশাপাশি ইতিমধ্যে দুর্গত হওয়া এক হাজার পরিবারকে ত্রাণ করা হচ্ছে এবং ১০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে।