শিরোনাম

আদালতের আদেশের পর আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা সরকারের কাছে সমাধান চান

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৭ মাস আগে
আদালতের আদেশের পর আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা সরকারের কাছে সমাধান চান

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার বিষয়ে আপিল বিভাগের আদেশের পর আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন যে আদালতের রায়ের সঙ্গে তাঁদের আজকের আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা সরকারের কাছে কোটার সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান চান এবং যৌক্তিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।

আজ বুধবার, আপিল বিভাগ কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশে কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আজও শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহবাগসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করা হয়েছে, ফলে রাজধানীর বাসিন্দারা যানজটে নাকাল হচ্ছেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলস্বরূপ ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে। এই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে চাকরিপ্রত্যাশী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন রিট করেন। ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট প্রাথমিক শুনানি শেষে রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত ৫ জুন রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন।

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন ৪ জুলাই চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময়ের আবেদন অনুযায়ী আপিল বিভাগ সেদিন “নট টুডে” (৪ জুলাই নয়) বলে আদেশ দেন এবং রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেন। এই অবস্থায় কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী গতকাল মঙ্গলবার আবেদন করেন। আজ আপিল বিভাগে দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানির পর আপিল বিভাগ আদেশ দেন। চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়েছে এবং আগামী ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ, বর্তমান অবস্থা যেমন আছে, তেমন থাকবে। ২০১৮ সালের কোটা বাতিল-সংক্রান্ত পরিপত্রের ভিত্তিতে যেসব সার্কুলার জারি হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে কোটা বহাল থাকছে না।

আজকের আদেশের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের সঙ্গে আমাদের আজকের আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা মূলত নির্বাহী বিভাগের কাছেই কোটা সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান চাইছি। এটি এক দফা দাবি। আদালতের এখতিয়ার নয়, একমাত্র নির্বাহী বিভাগই এটি পূরণ করতে পারে। আমরা সরকারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করছি।’

শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচিতে থাকা এই আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই আদেশ সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করেছে। আমরা আশাহত হয়েছি, কিন্তু দমে যাইনি। নির্বাহী বিভাগ থেকে কমিশন গঠন করে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সমাধান না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’