শিরোনাম

ছাগলকাণ্ডের মতিউরকে অবসর, প্রজ্ঞাপন জারি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৬ মাস আগে
ছাগলকাণ্ডের মতিউরকে অবসর, প্রজ্ঞাপন জারি

ছাগলকাণ্ডে সমালোচিত এনবিআর সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানকে অবশেষে অবসরে পাঠানো হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তার নিজস্ব আবেদন পর্যালোচনা করে তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।

আজ বুধবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এই বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অন্যদিকে, দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা চলমান রয়েছে। ছাগলকাণ্ডের পর তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে জুলাই মাস থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। আইআরডির একটি সূত্র জানায়, আত্মগোপনে (পলাতক) থাকার সময়েই তিনি অবসরের আবেদন করেন।

আইআরডির উপসচিব মকিমা বেগম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর মতিউর রহমানের আবেদনের ভিত্তিতে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৩ (১) ও ধারা ৫১ অনুযায়ী আগামী ২৯ আগস্ট থেকে তাকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হবে। তবে, অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা (অবসরোত্তর ছুটি, ল্যাম্প গ্র্যান্ট, পেনশন) তিনি পাবেন না।

এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তা মতিউর রহমান কোরবানির ঈদের আগে আলোচনায় আসেন তার ছেলের কারণে। কোরবানির জন্য সাদিক অ্যাগ্রো নামের একটি খামার থেকে মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে মুশফিকুর রহমান ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল এবং ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এরপর ওই ছেলের বাবার পরিচয় ও অর্থের উৎস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের ক্ষোভ ও কৌতূহল সৃষ্টি হলে, মতিউর রহমান প্রথমে মুশফিককে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করলেও পরবর্তীকালে নিশ্চিত হয় যে, মুশফিকই তার ছেলে।

এর আগে, ২৩ জুন, মতিউর রহমানকে এনবিআর থেকে সরিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডি) সংযুক্ত করা হয়।

এনবিআরের সদস্য পদে থাকলেও, মতিউর রহমান কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। উল্লেখ্য, এনবিআর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) অধীন একটি প্রতিষ্ঠান।

ছাগল কাণ্ডের পর থেকে মতিউর রহমানের বিপুল পরিমাণ সম্পদের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে। মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন এবং মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলোবাড়ি, জমিসহ নানা নামে-বেনামে সম্পত্তি থাকার বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।

২০০৭-০৮ সালের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে যুগ্ম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ধীরে ধীরে ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন মতিউর রহমান। এ সময় তার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আমলেও তিনি একটি প্রভাবশালী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।