শিরোনাম

ঢাকায় ১১ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৬ মাস আগে
ঢাকায় ১১ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় রোববার, সোমবার এবং মঙ্গলবার কারফিউ অব্যাহত থাকবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এই তিন দিনে কারফিউ শিথিলের সময় দুই ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এসব এলাকায় কারফিউ শিথিল থাকবে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ১১ ঘণ্টা।

শনিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংবাদ সম্মেলনে কারফিউ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

কারফিউ শিথিল করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘যেহেতু পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাচ্ছে, আমরা কারফিউ কিছুটা শিথিল করতে চাই।’ তিনি জানান, ‘ঢাকা মহানগর ও জেলা, গাজীপুর মহানগর ও জেলা, নারায়ণগঞ্জ এবং নরসিংদী জেলায় রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার কারফিউ শিথিল থাকবে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আমরা খুব শিগগিরই কারফিউ আরও শিথিল করার চেষ্টা করব।’

বাকি জেলাগুলোতে কারফিউ দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্বয় করে নিজ নিজ জেলায় সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জের কিছু ঘটনার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে এবং বর্তমানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।” মন্ত্রী পুলিশকে হত্যা করে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার একটি স্থিরচিত্রও দেখান। এছাড়াও, হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে থাকা ১২ পুলিশ সদস্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের একটি হাসপাতালে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, র‍্যাব হেলিকপ্টার দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পরও কোটার নামে এই বর্বরতা কেন চলেছে, এটি জাতির কাছে প্রশ্ন। এর দায়ভার কে নেবে? যারা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন এবং যারা আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে গেছেন, তাঁদেরই এই দায় নিতে হবে।” তিনি বলেন, “ছাত্র ভাইয়েরা যারা এখনও আন্দোলন প্রত্যাহার করেননি, তাঁদের অনুরোধ করছি আন্দোলন প্রত্যাহার করার। যদি তাঁরা প্রত্যাহার না করেন, তাহলে এই দায় এড়ানো সম্ভব হবে না।”

আন্দোলনকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের ওপর নানা আঘাত আসতে পারে, তাই তাঁরা লুকিয়ে ছিলেন বলে পরিবারকে জানিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছেন, সে জন্যই তাঁদের নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে এসেছি। তাঁরা এখানে এসে অনেকের নাম–ঠিকানা বলছেন, আন্দোলন ডাইভার্ট করার জন্য যাঁরা উসকানি দিয়েছেন, তাঁদের কথা বলছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁদের থেকে শুনছেন এবং তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল করছেন। যাঁদের নাম–ঠিকানা বলছেন, সেগুলো আমরা আমলে নিচ্ছি। আশা করছি, শিগগিরই এসব তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন।’

যাঁদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের মামলার আসামি করার সম্ভাবনা আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা তাঁদের কর্মকাণ্ড বলে দেবে। তাঁরা কিছু করেছেন কি না, আমরা এখনো জানি না।’