শিরোনাম

হাসিনা সরকারের গোপন ঋণ: শেষে সময়ে অর্থ ছাপিয়ে নেয় ৪১ হাজার কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৩ মাস আগে
হাসিনা সরকারের গোপন ঋণ শেষে সময়ে অর্থ ছাপিয়ে নেয় ৪১ হাজার কোটি টাকা

অর্থের উৎস এবং যোগান নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা, তারপরও শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ব্যয়ের খাত বড় করা হয়েছে। বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ লুটপাট হয়েছে। এই অর্থের যোগান দিতে সরকার ঋণনির্ভর হয়েছে, যদিও তারা বলেছিল নতুন ঋণ নয়, বরং ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার মধ্যে ৯৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে। এই অর্থবছরের শেষ দুই মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে গোপনে ৪১ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ ছাপিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই, যা এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল কাজ ছিল মুদ্রানীতি দিয়ে আর্থিক ব্যবস্থাপনা সুসংহত রাখা। কিন্তু আগের সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছে, যা ইচ্ছামতো ব্যবহার করা হয়েছে। ভালো-মন্দ বিবেচনা না করে টাকা ছাপিয়ে সরকারের যোগান দিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক নীতি বেসরকারি খাতকে টার্গেট করে বাস্তবায়িত হয়েছে, কিন্তু সরকারি খাতে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা এর বাস্তবায়ন দেখিনি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির ভূমিকা আমরা তেমনভাবে দেখিনি।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন বলেন, এভাবে টাকা ছাপানোকে “হাই পাওয়ার্ড মানি” বলা হয়। হাই পাওয়ার্ড মানি তখনই ব্যবহৃত হয়, যখন সরকারের জন্য টাকা অত্যন্ত জরুরি হয়ে ওঠে। তখনকার সরকার মনে করেছিল যে এটি করা প্রয়োজন ছিল, কারণ বিল, বন্ড, রাজস্ব দিয়ে এই চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছিল না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সকল পরামর্শ ও মতামত অগ্রাহ্য করে তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতেন।

খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত আর্থিক খাতের একটি পূর্ণাঙ্গ বিবরণী প্রকাশ করা। সেখানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা উচিত কার কাছে কী পরিমাণ অর্থ সরবরাহ হয়েছে, কতটা অনাদায়ী রয়েছে, এবং কোন জায়গায় অনিশ্চয়তা রয়েছে। আমরা মনে করি, এ ধরনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য-উপাত্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রকাশ করা যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সুনাম পুনরুদ্ধারে সংস্কার উদ্যোগ প্রয়োজন।

  • dailyusharbani
  • ঊষারবাণী
  •