শিরোনাম

মেঘনা গ্রুপের অর্থ পাচার অনুসন্ধানে দুদক সিআইডি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ মাস আগে

বর্তমানে বিতর্কিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপের অর্থ পাচার তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, ভোগ্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে কারসাজির সঙ্গে জড়িত মেঘনা গ্রুপের মালিক মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের বিস্তৃত তথ্য জমা পড়েছে। বর্তমানে মেঘনা গ্রুপের অর্থ পাচার তদন্তের তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে, এরপর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, এই তদন্তে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে জানা গেছে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেঘনা গ্রুপ পণ্য আমদানির আড়ালে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। গোয়েন্দা সংস্থাটি মেঘনা গ্রুপের ৭০টি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করে এনবিআরকে পাঁচটি সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে মোস্তফা কামাল বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং পরে ওই টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লিখিত হয়েছে, ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মেঘনা গ্রুপ প্রায় ৭৯ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি আমদানি করা পণ্যের প্রকৃত দামের তুলনায় অনেক কম দাম দেখিয়ে সরকারকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছে।

মেঘনা গ্রুপ ১ লাখ ২৮ হাজার ১৩১ কোটি টাকার শুল্কায়নযোগ্য আমদানি করেছে, কিন্তু আমদানির ঋণপত্র অনুযায়ী ইনভয়েজ মূল্য ছিল ৪৮ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। ফলে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৭৯ হাজার ৭৬২ কোটি টাকার অতিরিক্ত সুবিধা নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, ২০১৩ সাল থেকে মেঘনা গ্রুপের আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের প্রবণতা বাড়ছে। করোনার প্রভাবে ২০২০ সালে আমদানি কমে যাওয়ায় আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের পরিমাণও কমেছে। তবে ২০২০ সালের এলসি ও শুল্কায়নযোগ্য মূল্যের মধ্যে পার্থক্য ছিল ২৬৪ কোটি টাকা, যেখানে আগের তিন বছরে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে।

মোস্তফা কামাল তার গ্রুপের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে এলসি রিফান্ড করে বিমা কোম্পানি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং এই টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এনবিআরকে এই বিষয়ে অনুসন্ধান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন মো. জাকারিয়া, তার ভাই এম এফ কামাল, এবং তাদের বোন বিউটি আক্তার। বর্তমানে বিমা কোম্পানির চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল এবং মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সানা উল্লাহ। ২০০০ সালের পর কোম্পানিটির পরিচালকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, যার ফলে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ দু ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।

  • usharbani
  • ঊষারবাণী
  • মেঘনা গ্রুপ
  •