অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি, বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফের মরদেহ আগামী সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তার মরদেহ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে রাখা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হাসান আরিফের মেয়ে কানাডা থেকে দেশে ফেরার পর সোমবার মরদেহ দাফনের কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। তার ছেলে মুয়াজ আরিফ জানান, “সোমবার জোহরের আগে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।”
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এএফ হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ধানমন্ডি ৭ নম্বর জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮৩ বছর বয়সে এএফ হাসান আরিফ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাসান আরিফ ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। পরে তিনি ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন।
তিনি বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমি, আইন, বিচার, সংসদ এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি জানুয়ারি ২০০৮ থেকে জানুয়ারি ২০০৯ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
কর্মজীবনে হাসান আরিফ বিদেশি বিনিয়োগ, বাণিজ্যিক সালিশ, ব্যাংকিং ও অর্থনীতি, করপোরেট আইন, সাংবিধানিক আইন, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে এএফ হাসান আরিফ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।