বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলায় জামিন পেয়েছেন হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং যাদের বিরুদ্ধে কোনো আপিল হয়নি এমন ২ শতাধিক আসামি। রোববার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত বসিয়ে তাদের জামিন দেন।
বেলা ১১টার পরে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ পারভেজ সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর আবেদন করেন, অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর আলহাজ মো. বোখারান উদ্দিন সাক্ষ্যগ্রহণের প্রার্থনা করেন। উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্কের পর, বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে আদালতে সাক্ষ্য দেন প্রত্যক্ষদর্শী মেজর সৈয়দ মো. ইউসুফ।
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় দুটি মামলা হয়—হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে। হত্যামামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ আসামির মুক্তি আটকে ছিল।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়, যেখানে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৭৮ জন খালাস পান। পরে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় দেন, যেখানে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়, ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন এবং ২২৮ জনকে বিভিন্ন সাজা দেওয়া হয়। আর ২৮৩ জন খালাস পান।
হাইকোর্টের রায়ের আগে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। এদিকে ২২৬ জন আসামি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন, রাষ্ট্রপক্ষও ৮৩ জনের খালাস ও সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল বর্তমানে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ আসামির বিচার ২০১০ সালে শুরু হলেও মাঝপথে কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায় এবং শুধু হত্যামামলার সাক্ষ্য নেয়া হয়। এর পরে, ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্বর্তী সরকার নতুনভাবে তদন্ত শুরুর দাবি তোলে। গত ১৯ ডিসেম্বর শহিদ পরিবারের সদস্যরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জানান, এবং ২৪ ডিসেম্বর সরকারের পক্ষ থেকে আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে ৯০ দিনের মধ্যে পুনঃতদন্তের জন্য কমিশন গঠন করা হয়।