ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার আগে তাকে হলের শিক্ষার্থীরা ভাত খেতে দিয়েছিলেন। ভাত খাওয়ার সময় তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় বলে জানা গেছে।
বুধবার রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলের গেস্টরুমে তোফাজ্জলকে কয়েক দফায় মারধর করা হয়। প্রথম দফার মারধরের পর তাকে ভাত খেতে দেওয়া হয়। ভাত খাওয়ার সময় তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘খাবারের মান কেমন?’ তোফাজ্জল জবাব দেন, ‘খাবারের মান ভালো’। তার উত্তর শুনে শিক্ষার্থীরা অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন।
তোফাজ্জলকে ভাত খাওয়ানোর একটি ভিডিও “দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস” পায়। ভিডিওতে দেখা যায়, তাকে মুরগির মাংস ও সবজি দিয়ে ভাত খেতে দেওয়া হয়েছে এবং একজন তাকে পানির গ্লাসে পানি ঢেলে দিচ্ছেন। তোফাজ্জল সেই পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ভাত খাওয়া শুরু করেন।
ফজলুল হক মুসলিম হলের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, হলে স্পোর্টস টুর্নামেন্ট চলাকালীন বুধবার দুপুরে ৬টি মোবাইল ফোন ও ৪টি মানিব্যাগ চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয় এবং ধারণা করা হচ্ছে, সেই ক্ষোভ থেকেই তোফাজ্জলের উপর এমন নির্যাতন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, ‘বুধবার একটি ব্যাগে ৬টি মোবাইল ও ৪টি মানিব্যাগ রাখা হয়েছিল, যা কমেন্ট্রি বক্সের পাশে রাখা হয়। সেখানে থেকে ব্যাগটি চুরি হয়ে যায়। সন্ধ্যায় এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে হলের গেস্টরুমে মারধরের শব্দ শোনা যায়।’
২০১৮-১৯ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা গেস্টরুমে গিয়ে দেখি, একজনকে পেটানো হচ্ছে। চুরির ঘটনা নিয়ে সিসিটিভি ফুটেজও চেক করা হয়েছে, যেখানে তোফাজ্জলের সাথে চোরের কোনো মিল ছিল না। তবুও কেন তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি চাই।’