বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “আপনাদের প্রতি সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা চাই সরকার সফল হোক, কারণ তাদের সাফল্য আমাদের সাফল্য। কিন্তু আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও আওয়ামী লীগের দুঃশাসন দেখতে চাই না।”
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা নির্বাচিত হলে এককভাবে দেশ চালাবো না। জাতীয় সরকার গঠন করবো এবং যারা আমাদের আন্দোলনে ছিল, তাদের নিয়ে দেশ পরিচালনা করবো। তাহলে সমস্যা কোথায়? সন্দেহ কেন হচ্ছে? এই সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর পড়ছে।”
তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে স্বৈরাচার এরশাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব হয়েছিল। তবে শেখ হাসিনা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন, তখন আমরা বাধা দিতে পারিনি। এ সত্য আমাদের মানতে হবে। ১৫ বছর ধরে লড়াই করেও আমরা তাকে সরাতে পারিনি, তবে শেষ মুহূর্তে আন্দোলনকারীরাই সফল হয়েছে।”
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি বিষয়টি আগে থেকে জানতে পারেনি? উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? সরকারের স্থিতিশীলতার অভাব স্পষ্ট। সুতরাং, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য রোডম্যাপ দিন, যাতে জনগণের আস্থা তৈরি হয়।”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন, এর জন্যই কি এত সংগ্রাম করেছিলাম? এতে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নিতে পারে। তাই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার করে দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। নির্বাচনের পর জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, এবং সঞ্চালনা করেন পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আজিজুল হক, বর্তমান সভাপতি ডা. হারুন আল রশীদ এবং অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ।