আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার করা নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হলেও সরকার এই আইনের অপব্যবহার করেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
খোদা বখস বলেন, “মেঘনা আলমের বিষয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। তিনি এই আইনের আওতায় গ্রেফতার হওয়া প্রথম ব্যক্তি নন। একটি নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন, তাই এ নিয়ে বেশি কিছু বলা উচিত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা যেভাবে প্রশ্ন করছেন, তাতে মনে হচ্ছে সরকার কোনো বেআইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এই আইন অনেক আগে থেকেই প্রচলিত এবং প্রয়োগ হয়ে আসছে। আদালত আমাদের কাছে কিছু জানতে চেয়েছে, আমরা যথাযথভাবে তার জবাব দেব।”
এর আগে আইন উপদেষ্টা মেঘনা আলমের গ্রেফতার প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই বিষয়ে খোদা বখস বলেন, “আইন উপদেষ্টা কোন প্রসঙ্গে তা বলেছেন, আমরা জানি না। তিনি এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেননি। যেহেতু বিষয়টি এখন আদালতের হাতে, সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে।”
সুনামগঞ্জের এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে—যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘জনগণ এই সরকারকে পাঁচ বছর দেখতে চায়’—সেই প্রশ্নের উত্তরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “আমি বলিনি সরকার পাঁচ বছর থাকতে চায়। আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি শুধু বলেছি জনগণ এমনটি বলেছে। সরকার আগেই জানিয়ে দিয়েছে আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।”
ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে সরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পুলিশ প্রশাসনে রদবদল স্বাভাবিক নিয়ম। মেঘনা আলম ইস্যুর কারণে নয়, সম্ভবত ব্যক্তিগত অসুস্থতার কারণেই তাকে সরানো হয়েছে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে যখন বলা হয়—অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আট মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো দায়িত্বশীল আচরণ করছে না, তখন খোদা বখস বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেওয়ার অনীহা নতুন নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি সমাধানের দিকে যেতে। জেনারেল ডায়েরি (জিডি) ও এফআইআর (অভিযোগপত্র) অনলাইনে গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুরুতে দুটি জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে জিডি অনলাইনে নেওয়া হবে, এরপর ধীরে ধীরে পুরো ব্যবস্থাই অনলাইনে রূপান্তর করা হবে।”
জুলাই আন্দোলনের মামলায় ‘ছোটদের ধরা হচ্ছে, কিন্তু বড়দের ধরা হচ্ছে না’—এমন অভিযোগের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “রাঘব বোয়ালদের কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তারা আইনের আওতায় আসবেই। তবে যদি সত্যিই তারা ধরা পড়ে ছাড়া পেয়ে যায়, তখন আপনারা সমালোচনা করতে পারেন।”