নির্বাচন সংস্কার কমিশন দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদে ৫০০টি আসন রাখার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি, জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সদস্যসহ সব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাবও করা হয়েছে। নির্দলীয় ও যোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করার বিধান সংযোজনের সুপারিশও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
সংবিধান সংশোধন করে একটি স্থায়ী ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব এসেছে, যার অধীনে নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। এই কাউন্সিলই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও ২০ জন উপদেষ্টার নাম চূড়ান্ত করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে এবং জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন এই সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথম ধাপে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার বিশ্লেষণে এসব সুপারিশ উঠে এসেছে। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়।
আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে অক্টোবরের মধ্যে তালিকাভুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, ভবিষ্যতে অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনাও কমিশন সুপারিশ করেছে। কোনো আসনে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনর্নির্বাচনের বিধান রাখা, ‘না ভোট’ চালু করা এবং ‘না ভোট’ বিজয়ী হলে নির্বাচন বাতিল করার সুপারিশও প্রতিবেদনে রয়েছে। একই সঙ্গে গণভোটের বিধান সংবিধানে সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে ভোট স্থগিত বা পুনর্নির্বাচনের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ২০১৮ সালের নির্বাচনী অনিয়ম এবং ২০১৪ ও ২০২৪ সালের একতরফা নির্বাচনের আয়োজকদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিলে কমিশন রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে রেফারেন্স পাঠিয়ে ৯০ দিনের জন্য নির্বাচন স্থগিত করতে পারবে বলে সুপারিশ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন:
প্রধানমন্ত্রী:
তত্ত্বাবধায়ক সরকার:
নির্বাচনের সার্টিফিকেশন:
এই সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন হলে নির্বাচন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।