শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট রূপে পরিচিত করার জন্য আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকে দায়ী করা হয়েছে। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ৫ আগস্টের পর গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক মন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডে থাকা বেশ কয়েকজন বলেছেন যে, তারা শেখ হাসিনা এবং অন্যান্যদের বারবার সতর্ক করেছিলেন, যা ঘটছে তা ভালো হচ্ছে না। কিন্তু শেখ হাসিনা তাদের পরামর্শ মানেননি। তিনি ছিলেন একরোখা।
ডিবির তথ্যানুযায়ী, জুনাইদ আহমেদ পলক রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেখ হাসিনাসহ অন্য নেতারা তাকে পদত্যাগ করতে দেননি। জাহাঙ্গীর কবির নানক তাকে গালিগালাজ করেন এবং ওবায়দুল কাদের তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন, যদিও শেখ হাসিনা এই অপমানের সময় কোনো পদক্ষেপ নেননি।
সালমান এফ রহমান, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা, ডিবিকে জানান যে দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য ৫-৬ জন নেতা দায়ী। তিনি আরও বলেন, তিনি শেখ হাসিনাকে ব্যবসায়ীদের চাপের কথা জানিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেসব পাত্তা দেননি। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে তার বৈঠকগুলো ছিল অর্থনৈতিক বিষয়ে। সালমান এফ রহমান অর্থপাচারের কিছু দায় স্বীকার করলেও, তিনি মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য এবং শেখ হাসিনার পরিবারের দিকে দায় চাপিয়েছেন।
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, সবকিছুর জন্য শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য দায়ী। তিনি বিভিন্ন আইনগত বিষয় সম্পর্কে শেখ হাসিনাকে ব্যাখ্যা দিলেও, তিনি তা শুনতেন না।
রিমান্ডে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছেন। আরেক সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক জানান, তিনি অবসর নেওয়ার পর নিষ্ক্রিয় ছিলেন এবং তাকে এসবের মধ্যে জড়ানো ঠিক হচ্ছে না।