পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত মেজর তানভীর হায়দার নূরের স্ত্রী তাসনুভা মাহা এক আবেগঘন বক্তব্যে নিহত সেনা সদস্য ও বিডিআর জওয়ানদের পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায়, সেই দাবি জানান। তিনি বলেন, “আমার স্বামীর লাশ আজও পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেও গত চার মাসে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। ২০০৯ সালের ৩ মার্চ আমি বলেছিলাম, পিলখানায় আমাকে যারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে তিনজন হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল। এ নিয়ে আমি অনেক অপমানের শিকার হয়েছি। কোথাও চাকরিও করতে পারিনি।”
এদিকে, বিস্ফোরক মামলায় কারাগারে থাকা এক বিডিআর সদস্যের ছেলে শাকিল দাবি করেন, “অবিলম্বে কারাগারে থাকা বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে এবং একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহিন সরকার কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আজ জানিয়েছেন, পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হবে। আমরা তাঁকে সেই সময় দিতে রাজি। তবে যদি পাঁচ দিনের মধ্যে কমিশন গঠন ও প্রকাশ না করা হয় বা কমিশনে পক্ষপাতিত্ব দেখা যায়, তাহলে ষষ্ঠ দিনে রাজপথে নামবো।”
মাহিন আরও দাবি করেন, “ভুক্তভোগী পরিবারের একজন সদস্যকে কমিশনের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং আমাদের পক্ষ থেকে একজন ছাত্র প্রতিনিধি রাখতে হবে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে তাঁদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হবে।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাবেক সেনাসদস্য ও মানবাধিকারকর্মী খান সাহেব আমানউল্লাহ এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আবু সাঈদ লিওন।
সমাবেশে উপস্থিত থাকা কিছু ব্যক্তির হাতে “সাধারণ বিডিআর পরিবার” ব্যানার দেখা যায়। সেখানে লেখা ছিল, “শেখ হাসিনার প্রহসনমূলক বিডিআর হত্যা মামলা ও বিস্ফোরক মামলার রায় বাতিল, কারাগারে থাকা বিডিআর সদস্যদের মুক্তি, চাকরিচ্যুত সদস্যদের পুনর্বহাল এবং হত্যা মামলার পুনঃতদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
এর আগে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।”