শিরোনাম

নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সিদ্ধান্ত মেনে নেব : তারেক রহমান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারে বিএনপি প্রণীত ৩১ দফা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। জনগণের সমর্থন ছাড়া এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ফরিদপুর বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালায় বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা এবং জনসম্পৃক্ততার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। তারেক রহমান বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে বক্তব্য শুরু করে ৫টা ২৩ মিনিটে শেষ করেন।

জনগণের আস্থা ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা

তারেক রহমান বলেন, “আমরা দুই বছর আগে ২৭ দফা দিয়েছিলাম। তখন থেকেই আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার বিদায় নিচ্ছে। তবে কবে বিদায় নেবে, তা জানতাম না। আজ আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “৩১ দফার লক্ষ্য হলো জনগণের আস্থা অর্জন ও ধরে রাখা। এ দায়িত্ব শুধু আমার নয়, সকল নেতা-কর্মীর। জনগণের সঙ্গে সরাসরি কাজ না করলে, তাদের আস্থা ধরে রাখা সম্ভব হবে না। বিএনপির প্রতিটি নেতা ও কর্মী দলের প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের কাছে এই দফাগুলোর বার্তা পৌঁছে দেবে।”

ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান

তারেক রহমান সতর্ক করে বলেন, “আমরা যদি ভুল চিন্তা বা কাজ করি, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারি। এতে শুধু বিএনপি নয়, দেশের ক্ষতি হবে। যারা ভুল করছে, তাদের বোঝাতে হবে। সবার মিলিত প্রচেষ্টায়ই আমরা সফল হতে পারব।”

জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র গঠনের প্রতিশ্রুতি

তারেক রহমান বলেন, “আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হবে না। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে কাজ পাবে, কৃষক তার ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে। আমাদের লক্ষ্য জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র গঠন করা। শুধু প্রধানমন্ত্রী বা এমপিদের নয়, জনপ্রতিনিধিদের সব পর্যায়েই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “শেখ হাসিনার শাসনামলে জবাবদিহিতার অভাব ছিল। যদি জবাবদিহিতা থাকত, ফরিদপুর থেকে দুই হাজার কোটি টাকা পাচার হতো না। এই ধরণের অনিয়ম রোধে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে।”

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ৩১ দফার গুরুত্ব

তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির এই ৩১ দফার মাধ্যমে আমরা জনগণের প্রত্যাশা পূরণের সূচনা করতে চাই। এটি একদিনে সম্ভব নয়। তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় একসময় এটি বাস্তবায়ন হবে। জনগণের আস্থা অর্জনই আমাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য সবাইকে জনগণের কথায় ওঠা-বসা করতে হবে, তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।”

কর্মশালার আয়োজন ও অংশগ্রহণ

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, “বিএনপির ৩১ দফা একটি মানবিক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা। এটি শেখ হাসিনার সরকারের জুলুম-অত্যাচারের প্রতিবাদ।”

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৩১ দফা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ। এছাড়া বক্তব্য দেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মেহেবী আমিন। কর্মশালায় ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর এবং গোপালগঞ্জের বিএনপির নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। তারা তারেক রহমানের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন, যার উত্তর তিনি ভার্চুয়ালি দেন।