ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে আদালতের ঘোষণা সত্ত্বেও শপথ গ্রহণে বিলম্ব ও সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। সোমবার (১৯ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে তিনি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
স্ট্যাটাসে ইশরাক লেখেন, “মেয়র পদ কোনো বড় বিষয় নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু ব্যক্তির ক্ষমতালোভ ও সেটিকে স্থায়ী করার অপচেষ্টার নগ্ন বাস্তবতা প্রকাশ করাই ছিল প্রধান উদ্দেশ্য।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক সমালোচনা ও ব্যক্তিগত আক্রমণ সহ্য করেছি। পিতা-মাতাকে নিয়ে গালমন্দও শুনেছি, তবুও চুপ থেকেছি। কারণ, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার স্বার্থে এসবের মুখোশ খুলে দেওয়া জরুরি ছিল। বিএনপির প্রার্থীর মেয়র পদ আটকে দিয়ে তারা পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে কী ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।”
স্ট্যাটাসে তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করে লেখেন, “এরা শুধু নিরপেক্ষতা বিসর্জন দেয়নি, বরং একটি দলের হয়ে কাজ করেছে। বিচারকদের হুমকি দিয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করেছে, আদালতে হস্তক্ষেপ করেছে এবং আমলাতন্ত্রের সহযোগিতায় একটি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। একদিন এদের প্রত্যেকের পরিচয় জনসমক্ষে আসবে।”
বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন তার এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, “আমি আগেই বলেছি, কবর প্রস্তুত রয়েছে—আল্লাহ চাইলে ঠিক সেখানেই যাবো ইনশাআল্লাহ। এই লড়াই এখনো শেষ হয়নি। আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় করেই ছাড়বো, আর তা সম্ভব না হলে আল্লাহর নির্ধারিত জায়গায় বিশ্রাম নেব। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার নিয়ে কোনো ধরনের আপস করা হবে না।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তবে চলতি বছরে সরকারের রদবদলের পর, ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম আগের ফলাফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র হিসেবে রায় প্রদান করেন। এরপর ২২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে গেজেট প্রকাশের কার্যক্রম শুরু করে এবং ২৭ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
তবে এখনও তার শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়নি। এ পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইশরাকের অনুসারীরা সম্প্রতি রাজধানীতে প্রতিবাদ ও সমাবেশ করে আসছেন।