বিসিবিকে নিয়ে বোমা ফাটালেন হাথুরু

ছবি : সংগৃহীত

চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে ছয় মাসেরও বেশি সময় আগে। তাঁর বিদায়ের পর ফিল সিমন্স এখন বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্বে আছেন। যখন বাংলাদেশ দল দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ব্যস্ত, ঠিক তখনই হাথুরুসিংহে নিজের অবস্থান নিয়ে মুখ খুললেন এবং বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন।

গত বছরের আগস্টে ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। তখন হাথুরুসিংহে কোচ হিসেবে পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজে দলের সঙ্গে ছিলেন। এর কিছুদিন পর, অক্টোবরে ফারুক আহমেদ হাথুরুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাকে বরখাস্ত করেন। অন্যতম অভিযোগ ছিল—২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে স্পিনার নাসুম আহমেদকে চড় মারা। তবে হাথুরুসিংহে এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘কোড স্পোর্টস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাথুরু বলেন, “আমি কখনোই কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে ঝগড়া করিনি বা আবেগপ্রবণ আচরণ করিনি। হয়তো হতাশ হয়ে একবার ডাস্টবিন ছুঁড়ে ফেলেছিলাম—যা যে কোনো কোচের ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে যা ঘটেছে, তা তার থেকে একেবারে ভিন্ন। আমার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করা হয়েছিল।”

ওই ঘটনার তদন্তে একটি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তবে তদন্ত রিপোর্ট ও বারবার অভিযোগের মুখে হাথুরু নিজ অবস্থানেই অটল ছিলেন এবং সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। অবশেষে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচ মাস আগেই তাঁকে বরখাস্ত করে বিসিবি। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পরিবারের কাছে ফিরে যান। ছয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি বিসিবির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, “আমি জানি না, গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত কতগুলো চাকরির সুযোগ হারিয়েছি। তারা শুধু আমার চুক্তি বাতিল করেই ক্ষান্ত হয়নি—আমার পেশাগত জীবন ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। নতুন সভাপতি এটি আগেভাগেই ঠিক করে রেখেছিলেন। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি।”

এই বিতর্কিত ঘটনার সময় দলের স্পিন বোলিং কোচ ছিলেন রঙ্গনা হেরাথ। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “আমি সেখানে ছিলাম। পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, নাসুমকে চড় মারার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিশ্বকাপ চলাকালে আমাদের চারপাশে সবসময় ক্যামেরা ছিল। কেউ চাইলে গল্প বানাতে পারে, কিন্তু প্রমাণের তো দরকার হয়। আমি নিশ্চিত করে বলছি, চড় মারা বা এমন কিছু ঘটেনি।”

চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দুই মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম মেয়াদে (২০১৪-২০১৭) তাঁর অধীনে বাংলাদেশ ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছায় এবং ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল খেলে। এরপর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি আবার দায়িত্ব নেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এবং পাকিস্তানের মাঠে ঐতিহাসিক জয় ছিল উল্লেখযোগ্য সাফল্য। যদিও ২০২৩ বিশ্বকাপে দলের পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত ছিল না, তবুও কিছু বড় অর্জন ছিল তার কোচিংয়ে।