জর্জ লিন্ডে দারুণভাবে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছেন। পুরো ম্যাচে দল যখনই চাপে পড়েছে, বাঁহাতি এই স্পিনার তখনই দারুণ পারফরম্যান্সে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পাশাপাশি বল হাতে করেছেন ম্যাচজয়ী স্পেল। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যের সৌজন্যে উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ১১ রানে পরাজিত করেছে পাকিস্তানকে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ডারবানে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে সংগ্রহ করে ১৮৩ রান। জবাবে পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানে থামে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ে ডেভিড মিলারের ভূমিকাও ছিল অসামান্য। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলের শুরুর ব্যাটাররা পাকিস্তানি বোলারদের সামনে টিকতে না পারলেও মিলার খেলেন অসাধারণ এক ইনিংস। ২৮ রানে ৩ উইকেট হারানো অবস্থায় তিনি ব্যাট হাতে লড়াইয়ে ফেরান দলকে। হেনরিখ ক্লাসেনের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৪৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন।
ক্লাসেনকে আউট করেন আব্বাস আফ্রিদি। এরপর ডোনোভান ফেরেইরা ৭ রান করে ফিরে গেলে চাপ বাড়ে প্রোটিয়াদের ওপর। তবে মিলার তার বিস্ফোরক ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন। ৮ চার ও ৪ ছক্কার সাহায্যে ৮২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে তিনি সাজঘরে ফেরেন শাহিন আফ্রিদির বলে।
মিলারের আউটের পর দ্রুত আরও ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই চাপের মধ্যেই লিন্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২৪ বলে ৪৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে তিনি দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেন।
পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুটাও ছিল হতাশাজনক। ওপেনারদের মধ্যে একজন শূন্য রানে ফেরেন। তবে সাইম আইয়ুব পাওয়ারপ্লের সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছুটা মোমেন্টাম তৈরি করেন। অন্যদিকে, অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ছিলেন ধীরগতির। প্রথম ৪০ বলে তিনি মাত্র ৩৩ রান করেন, যা দলের ওপর চাপ বাড়ায়।
রিজওয়ানের ধীর ইনিংসের প্রভাব পুরো দলেই পড়ে। একের পর এক ব্যাটার চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয়ে দ্রুত উইকেট হারান। উসমান খান ও তৈয়ব তাহিররাও তেমন কোনো অবদান রাখতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত লিন্ডে ও মিলারের অসাধারণ পারফরম্যান্সে সিরিজে জয়ের সূচনা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শেষ ৫ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৭৩ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের এলোমেলো বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে পাকিস্তান মাত্র ২ ওভারেই তুলে নেয় ৩৭ রান। তবে শেষ ৩ ওভারে রিজওয়ান ও শাহিন আফ্রিদিরা আর প্রয়োজনীয় ৩৬ রান তুলতে পারেননি। লিন্ডে নিজের শেষ ওভারে এসে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন, যা ম্যাচের মোড় দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে ঘুরিয়ে দেয়।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৯ রান। উইকেটে স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে ছিলেন শুধু রিজওয়ান। তবে মাফাকার বলে আউট হয়ে ৬২ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি। রিজওয়ানের আউটের সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের জয়ের স্বপ্ন। তাদের ইনিংস থেমে যায় ১৭২ রানে।