বাংলাদেশের ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা মুশফিকুর রহিম অবশেষে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলের বাজে পারফরম্যান্সের পর থেকেই মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এর মধ্যেই বুধবার (৫ মার্চ) ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মুশফিক।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগঘন বার্তায় ১৯ বছরের বর্ণাঢ্য ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ইতি টানেন এই অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। তিনি লেখেন, “ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে আমি আজ অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি।”
মুশফিকের অবসর ঘোষণার পর তার দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল আবেগঘন ভিডিও বার্তায় স্মৃতিচারণ করেন। একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, মুশফিক টেস্ট ক্রিকেটে আরও কিছু বড় অর্জন যোগ করবেন।
তামিম জানান, ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত মুশফিকের জন্য বেশ কঠিন ছিল। তিনি বলেন, “আমি ওর অনেক কাছের বন্ধু, তাই বুঝতে পারি খেলা ছেড়ে দেওয়া ওর জন্য কতটা কঠিন।”
তামিমের একটি বড় চাওয়া, মুশফিক যেন দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০টি টেস্ট খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেন। এখন পর্যন্ত তিনি ৯৪টি টেস্ট খেলেছেন, আর মাত্র ৬টি ম্যাচ খেললেই এই অনন্য অর্জন সম্ভব হবে। তামিম বলেন, “তুই এখনো টেস্ট ক্রিকেট খেলবি। আমি দোয়া করি, তুই ভালো করবি। আশা করি, একশো টেস্ট খেলবি, যা এখনো কেউ পারেনি। বাংলাদেশ তোকে খুব মিস করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।”
মুশফিকের খেলায় নিবেদন ও কঠোর পরিশ্রমের বিষয়ে তামিম বলেন, “আমরা অনেক সময় মজা করে বলতাম, ও এত কষ্ট করে কীভাবে! খেলার প্রতি ওর ভালোবাসা আর ডেডিকেশন বলে বোঝানো যাবে না। আজকের দিনটি ওর জন্য কতটা কষ্টের, কাছের বন্ধু হিসেবে আমি তা অনুভব করতে পারছি।”
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকের পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ১৯ বছরে ২৭৪টি ওয়ানডে খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। এই সময়ে তিনি ৩৬.৪২ গড়ে ৭,৭৯৫ রান সংগ্রহ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি ফিফটি।