শিরোনাম

জার্মানির একটি রাজ্য সরকারি অফিসে মাইক্রোসফট টিমস নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পেছনে কারণ কী?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১ মাস আগে

জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় শ্লেসভিগ-হলস্টাইন রাজ্য সরকারি কার্যালয়ে মাইক্রোসফট টিমস এবং অন্যান্য কিছু সফটওয়্যার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী তিন মাসের মধ্যে পুলিশ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের অধিকাংশ কর্মকর্তা টিমস ব্যবহার বন্ধ করবেন। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো বিদেশি প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় ডিজিটাল অবকাঠামো শক্তিশালী করা।

রাজ্যের ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ক মন্ত্রী ডির্ক শ্রোডার এএফপিকে বলেন, “আমরা আমাদের তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাই, তাই মাইক্রোসফট টিমসের ব্যবহার বন্ধ করা হচ্ছে।” এই নীতির আওতায় প্রাথমিকভাবে ৬০ হাজার সরকারি কর্মীর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার কর্মী আসবেন। পরবর্তীতে আরও ৩০ হাজার শিক্ষককে এই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

২০২৪ সাল থেকে ধীরে ধীরে মাইক্রোসফটের সফটওয়্যার প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলের পরিবর্তে লিব্রে অফিস এবং আউটলুকের বদলে ওপেন-এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জায়গায় লিনাক্সভিত্তিক অপশন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

মন্ত্রী শ্রোডার ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এই সংকট আমাদের শিখিয়েছে যে শুধু জ্বালানিতে নয়, প্রযুক্তিতেও আমরা কতটা নির্ভরশীল। এখনই সময় এই নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে।” সরকারি তথ্য সংরক্ষণের জন্য জার্মানির রাষ্ট্রীয় ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হবে, যাতে বিদেশি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ এড়ানো যায়।

ইউরোপে মাইক্রোসফটের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা-বিরোধী তদন্ত শুরু করে, অভিযোগ ছিল যে টিমসকে অন্যান্য সফটওয়্যারের সঙ্গে বান্ডিল করে বিক্রি করে বাজার একচেটিয়া করা হচ্ছে। শ্রোডার দাবি করেন, শ্লেসভিগ-হলস্টাইনের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত হচ্ছে এবং অন্যান্য দেশও এ বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছে।

এই পদক্ষেপ ডিজিটাল স্বাধীনতা ও তথ্য নিরাপত্তার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।