বুধবার (৩১ মার্চ) দৈনিক শিক্ষাডটকমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
বিবৃতিতে শিক্ষক নেতারা বলেন, জনবল কাঠামোয় কলেজ শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কুখ্যাত অনুপাত কিছুটা শিথিল করে এতে যেসব শর্ত যুক্ত করা হয়েছে তা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করবে, ফলে প্রতিষ্ঠানের শৃংখলা বিনষ্ট হবে। শিক্ষক সংগঠনগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই অনুপাত প্রথা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা। যা করা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। নতুন নীতিমালায় উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এবং স্কুল এন্ড কলেজে চালু থাকা সহকারী অধ্যাপকের পদ বিলুপ্ত করে সিনিয়র প্রভাষকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে চালু থাকা সহকারী অধ্যাপকের পদ অবনমন করে সিনিয়র প্রভাষকের পদ সৃষ্টি শিক্ষকদের জন্য মর্যাদা হানিকর ও অপমানজনক একটি বিষয়।
নেতারা আরও বলেন, নীতিমালায় বলা হয়েছে সিনিয়র প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপকের বেতন এবং সুযোগ সুবিধা একই থাকবে। তাহলে কেন এই অবনমন? বাকবিশিস এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের মত সহকারী অধ্যাপকের পদ চালু রাখার। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের শিক্ষানীতি অনুযায়ী কলেজ পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করার কথা।
শিক্ষক নেতারা আরও জানান, দীর্ঘদিনের দাবি সত্বেও অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদানকারী শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কোন সুযোগ রাখা হয়নি। স্নাতক পর্যায়ে ৩য় শিক্ষকদের এমপিওভূক্তির সব প্রস্তুতি নেয়ার পরও তাদেরও এমপিওভুক্তির কোন প্রস্তাবনা নেই। অনার্স-মাস্টার্স ও স্নাতক পর্যায়ে ৩য় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছে বাকবিশিস।
শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জনবল কাঠামোর কারণে কলেজগুলোতে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের বিধিতেও নিয়োগের ক্ষেত্রে সেসব কঠোর শর্ত বহাল রাখা হয়েছে। বাকবিশিস মনে করে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের নীতিমালার শর্তগুলো বাতিল করে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের জনবল কাঠামো অনুসরণ করে শিক্ষকদের নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপকদের ওই পদ দুটিতে আবেদনের সুযোগ দেয়া হোক। এতে করে দক্ষ ও সুযোগ্য শিক্ষকরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের সুযোগ পাবেন। যা শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সুচারু ও দক্ষতার সাথে পরিচালনা করা অনেকটা সহজ হবে।
শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জনবল কাঠামোর ফলে স্কুল ও কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, ডিগ্রি কলেজ এবং অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মারাত্মক বৈষম্য সৃষ্টি হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিষয়গুলো বিবেচনা করে জনবল কাঠামোয় প্রয়োজনীয় সংশোধন করার ব্যবস্থা নেয়া জোর দাবি জানাচ্ছি।