ঊষারবাণী ডেস্ক : প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ী হয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন অনেক প্রার্থী। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে সেই সংখ্যা বাড়তে চলেছে। এ মাসেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দফার নির্বাচন। আর এই বিনা ভোটে জয়ী প্রার্থীদের সবাই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত।
নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া দুই ধাপের ভোটে ছয় শতাধিক প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ের পথে রয়েছেন। এই সংখ্যা কম-বেশি হতে পারে। নির্বাচনের আগেই জয় পাওয়ার এই ধারাকে গণতন্ত্রের জন্য দুঃসংবাদ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ইসি জানায়, ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় পরবর্তী ধাপের ভোট গ্রহণের জন্যও সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে মনোনয়ন বাছাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। তবে বাকি আছে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের।
এখন পর্যন্ত মাঠপর্যায় থেকে পাওয়া ইসির কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ৭টি ইউপিতে ৩১৩ জন প্রার্থীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তাঁদের বিপক্ষে কেউ মনোনয়নও জমা দেননি। কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে সেদিনই তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবেন।
গত মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তৃতীয় ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত নারী সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদে মোট ৫৩ হাজার
৮০১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৩, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭০ ও সাধারণ সদস্য পদে ২০০টি পদে একক প্রার্থী রয়েছেন। অবশ্য এই সংখ্যাটা শেষ পর্যন্ত কমতে বা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান আরজু বলেন, এখন পর্যন্ত মোট কতজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত কম-বেশি হয়।
এদিকে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৮ ইউপিতে একক প্রার্থী থাকায় চেয়ারম্যান পদে ৮১, সংরক্ষিত নারী পদে ৭৬ ও সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন। এই ধাপে তিন পদে মোট বিনা ভোটে জিতেছেন ৩৬০ জন প্রার্থী। প্রথম ধাপে ৩৬৯ ইউপিতে ৬৯ চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হন।
দেশে একের পর এক নির্বাচনগুলোতে বিনা ভোটে জয় পাওয়ায় গণতন্ত্রের জন্য দুঃসংবাদ বলে মনে করছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে সব ক্ষেত্রে দায়ী করা যায় না। তারা তো সবাইকে ভোটে অংশ নিতে আহ্বান জানায়। কিন্তু সবাই না এলে তো কিছু করার থাকে না। তবে এত প্রার্থী ভোটের আগেই জয় পেয়ে যাওয়াটা গণতন্ত্রের জন্য দুঃসংবাদ। আমরা সবাই চাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক।’
মাঠপর্যায় থেকে ইসি সচিবালয়ে আসা তথ্য থেকে জানা যায়, তৃতীয় ধাপের ইউপি ভোটে চেয়ারম্যান পদে ৫ হাজার ২৮৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২০টি রাজনৈতিক দলের রয়েছেন ১ হাজার ৭৪৭ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩ হাজার ৫৩৮ জন। দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ৯৮১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৪৩৮, জাতীয় পার্টি ১৮৭, জাকের পার্টি ৬৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ২৫ জন প্রার্থী দিয়েছে।
এই ধাপে ৩১টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের মাধ্যমে এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।