উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বেশির ভাগেরই ক্ষমা প্রার্থনা
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪১:১২,অপরাহ্ন ০২ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৪৫৪ বার পঠিত
শোকজের জবাব দেননি ৩২জন প্রার্থী
ঊষারবাণী ডেস্ক : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে দেয়া শোকজের জবাবে ডাকযোগে পাঠানো ফিরতি চিঠিতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এদের কেউ কেউ নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে নিজ আসনের মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের দায়ী করেছেন। শোকজ চিঠির জবাব পাঠানোর শেষ কার্যদিবস ছিলো গত মঙ্গলবার। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া আট সাংগঠনিক বিভাগের দুশ নেতাকে তালিকাভুক্ত করে আওয়ামী লীগ। পরবর্তীতে অধিকতর যাচাই-বাছাই শেষে দলীয় পদধারী ১৭৭ নেতার নামে শোকজ চিঠি পাঠানো হয়। তাদের অধিকাংশই শোকজের জবাব দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২১ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়ে শোকজ চিঠি পাঠানো হয় ৮ সেপ্টেম্বর। মঙ্গলবার পর্যন্ত শোকজ নোটিশের অধিকাংশের জবাব কেন্দ্রে জমা পড়ছে। আওয়ামী লীগের দফতর বরাবর পাঠানো ফিরতি চিঠির শুরুতে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি অভিযুক্তদের অনেকে সশরীরে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দেখা করেও ক্ষমা চেয়েছেন। তবে চিঠি না পাওয়া, শোকজ জবাব দিতে অনীহা থেকেও চিঠির জবাব দেননি অনেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, শোকজের জবাব যারা দিয়েছেন তাদের বিষয়ে আগামী কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে। আর যারা জবাব দিচ্ছেন না তাদের শাস্তি শোকজ জবাবের সময়সীমা শেষে (বুধবার থেকে) অটোমেটিক কার্যকর হবে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার শোকজের জবাব দেয়ার সময়সীমা শেষ হলেও এখনও জবাব দেননি অনেকে। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৫টি শোকজ নোটিশের জবাব কেন্দ্রে জমা পড়েছে। বাড়তি সময় চেয়ে আবেদনও করেননি বাকি ৩২ জন। সূত্র জানায়, প্রথম দফায় শুধু দলীয় পদধারী আওয়ামী লীগ নেতাদের শোকজ করা হয়েছে। এই তালিকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পর্যন্ত পদে থাকা নেতারা রয়েছেন, যারা উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচন করেছেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েক নেতা জানান, বিদ্রোহী প্রার্থীদের পাঠানো শোকজ চিঠির জবাবে পাঠানো ফিরতি চিঠিতে অনেক প্রভাবশালী নেতার নাম এসেছে। এর মধ্যে মন্ত্রী ও এমপিরা রয়েছেন। তাদের নামের তালিকা আলাদা করা হচ্ছে। তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর চলমান সাংগঠনিক অভিযানে এসব দলীয় মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী নেতারা শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন।
৮ সেপ্টেম্বর পাঠানো শোকজ চিঠিতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। জবাব সন্তোষজনক না হলে অভিযুক্ত নেতারা দলীয় পদসহ স্থায়ী বহিষ্কার হতে পারেন বলে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে। ৫ ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগেরই দুশ নেতা নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেন। তাদের মদদদাতা হিসেবে প্রায় অর্ধশত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিদ্রোহী’ ও তাদের মদদদাতাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। তবে বন্যা, ডেঙ্গু ও শোকাবহ আগস্টের কারণে এই কার্যক্রম পিছিয়ে যায়। তবে শোকজের জবাবে ক্ষমা প্রার্থনাকারীর অনেকেই সাধারণ ক্ষমায় পার পেয়ে যাবেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছ।
এমআই/এসবি