কুলাউড়ায় বিশ্বকবির শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে আয়োজকদের নিষ্ঠুর অমানবিকতা !
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৩০:৪২,অপরাহ্ন ০৫ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৩৬৪ বার পঠিত
কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়ায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুলাউড়া আগমনের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক অমানবিক খেলায় মেতেছিলেন অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটি। ০৪ নভেম্বর সোমবার সকাল ১০টায় স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের পর কুলাউড়া শহরের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বের করা হয় এক শোভাযাত্রা। কিন্তুু এই শোভাযাত্রায় উপজেলার কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষার্থী উপস্থিতি হয়নি।
শোভাযাত্রার শহর প্রদক্ষিণের পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা হয় স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে। সেখানে তাদের একটানা বেলা ২.০০টা পর্যন্ত রোদ্রের মধ্যে অমানবিকভাবে দাড় করিয়ে রাখা হয়। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে শুধু তাদের জন্য একটি ক্ষুদ্র টিফিন কেক দেয়া হয়েছে। পরে তারা পেটের ক্ষুধার কারণে আয়োজকদের নিষেধ অগ্রাহ্য করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে। শিশুরা যেন ক্লান্ত হয়ে একটু পানি পান করবে, সে ব্যবস্থাও ছিলো না। আর অনুষ্ঠানের অতিথিসহ অন্যান্যদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল বিরানি প্যাকেটের। এ নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুশীল সমাজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ সচেতন মহল অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় লোকজন যখন অনুষ্টান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তখন দুরবর্তী লংলা কলেজের মেয়েদেরকে টেনে আনা হয় অনুষ্ঠান স্থলে। সন্ধ্যায় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাড়ি ফিরেছেন লংলা কলেজের মেয়েরা। লংলা কলেজের শিক্ষার্থী অভিবাবকদের এ নিয়ে নিজ কলেজের শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কুলাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, যেকোন জাতীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি স্থানীয় অনেক অনুষ্ঠান এই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সফল করা হয়। কিন্তুু দুঃখের বিষয় হলে সত্য যে, রবীন্দ্রনাথের আগমণের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটি এই শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেননি। বাচ্চাদের অমানবিকভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে। তাদের টিফিন কেক ছাড়া কোন অ্যাপায়ন করা হয়নি। আমরা বিদ্যালয়ে নিয়ে তাদের নিজ উদ্যোগে তাদের অ্যাপায়িত করেছি।
অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মইনুল ইসলাম শামীম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শুধুমাত্র নাস্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাদের অ্যাপায়িত করানো হয়েছে। দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে অনুষ্ঠানের অতিথি, শিক্ষকবৃন্দ ও দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেয়া কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আইয়ুব উদ্দিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি তবে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মামুনুর রহমান বলেন, আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে শুধুমাত্র শোভাযাত্রার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেয়া হয়েছে। কিন্তুু অনুষ্ঠানস্থলে তাদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা ঠিক হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন।