সিলেটের তালিকায় নেই অনেক প্রভাবশালী অনুপ্রবেশকারীর নাম ‘ এ নিয়ে তৃণমূলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ১:৪৫:৫৯,অপরাহ্ন ০৮ নভেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৫৬৩ বার পঠিত
ঊষারবাণী প্রতিবেদক : বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আহমদ হোসেন কর্তৃক গণমাধ্যমকে দেয়া তথ্য অনযায়ী সিলেট বিভাগে আওয়ামিলীগে বিভিন্ন পদ-পদবীধারী অনুপ্রবেশকারীদের প্রাথমিক তালিকায় ৫৫জন অনুপ্রবেশকারীর নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। তথ্যঅনুযায়ী এই তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সিলেট জোড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্ঠি হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন উপজেলায় আরো অনেক চিহ্নিত অনুপ্রবেশ কারী রয়েছেন যাদের নাম এই তালিকায় না থাকায় অনেক নেতা কর্মী বিশ্ময় ও উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। অনেকে আবার তালিকায় থাকা কয়েকটি নাম দেখে বিস্মিতও হয়েছেন।
অনুপ্রবেশকারীদের অধিকাংশই এসেছেন বিএনপি-জামায়াত থেকে। তাছাড়া, বিভিন্ন সময়ে আরো অন্যান্য দল থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছেন একাধিক অনুপ্রবেশকারী। দলে প্রবেশ করেই বাগিয়ে নিয়েছেন পদ-পদবি। এ রকম একাধিক অনুপ্রবেশকারী বিভিন্ন উপজেলা কমিটিতে যুক্ত রয়েছেন এবং আগামীতে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটিতে যুক্ত হতে যাচ্ছেন প্রকাশিত তালিকায় তাদের নাম আসেনি এমনটি জানিয়েছেন বিভিন্ন উপজেলার ত্যাগী তোকর্মীরা। এমনকি উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিতে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কাছে চিহ্নিত এবং নিন্দিত ব্যক্তিদের নাম ও নেই এই তালিকায়। তবে সাংগটনিক পদ-পদবীর বা্ইরে অনেক অনুপবেশকারী রয়েছেন যারা বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনিক পদবীধারী যাদের নাম এই তালিকায় না থাকলেও পরবর্তী তালিকায় তাদের নাম আসছে এবং এই প্রকৃয়া চলমান রয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি তত্ত্বাবধানে দলে শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে অনুপ্রবেশ কারীদের তালিকা করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, ওই তালিকাটি প্রধানমন্ত্রীর দলীয় কার্যালয় থেকে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব আসবে। অনুপ্রবেশকারী, বিতর্কিত বা অপকর্মকারীরা আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে যেন আসতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
এদিকে, যাচাই-বাছাই শেষে প্রকাশিত অনুপ্রবেশ কারীর তালিকায় যাদের নাম যুক্ত রয়েছে তারা হলেন-ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে পাঁচ নম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান, ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা (বিআইডিসি) শ্রমিক লীগ নেতা মোহাম্মদ মুন্না,ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আকরাম হোসেন, মাহবুবুল ইসলাম মিছলু, মামুন আহমদ। অনুপ্রবেশকারী তালিকায় বিশ্বনাথ থেকে নাম রয়েছে বিশ্বনাথের ইদ্রিস আলী ও সমুজ আলী। এই সহোদরের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
মৌলভীবাজারে অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় রয়েছেন যথাক্রমে বড়লেখা উপজেলা তাঁতী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আশরাফ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ দক্ষিণ নন্দীপাড়ার শাহ আলম, জেলার কুলাউড়ার বরমচাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাছিদুর রহমান, ভাটেরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরুজ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম নানু এবং হাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ বক্স, কুলাউড়ার মধু মিয়া, বড়লেখার মোহাম্মদ আশরাফ, জুড়ীর শরীফুল ইসলাম টেনু।
অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় হবিগঞ্জ থেকে নাম যুক্ত হয়েছে সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি কামাল সরদার, লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুজ্জামান মোল্লা, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলী মর্তুজা, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি এটিএম জুয়েল,হবিগঞ্জ সদরের মাহমুদ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, কয়ছর আহমদ শামীম, আবদুর নুর মাহির, ফরিদ আহমদ, আবু তালেব, আলাউদ্দিন, সোহরাব হোসেন মুহুরী, আবদুস সামাদ, অনু মিয়া, সোনাই মেম্বার, মাধবপুর উপজেলার হামদু মিয়া, সোহেল মিয়া, সাহেদ মিয়া, আবদুল গফুর প্রধান ও আহাদ আলী, লাখাইয়ের নুরুজ্জামান মোল্লা, আজমিরীগঞ্জের আলাউদ্দিন মিয়া ও মোশাহিদ মিয়া, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার রফিকুল ইসলাম মলাই, হবিগঞ্জের শাহেদ মিয়া।
সুনামগঞ্জ জেলায় অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় নাম রয়েছে ধর্মপাশা উপজেলার ফেরদৌসুর রহমান, মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, মোহাম্মদ মোকাব্বির, মোহাম্মদ একলাস, ময়না মিয়া, বাবুল মিয়া, তাহের মিয়া, আলাউদ্দিন শাহ, আলম মুন্সি, মহসীন আহমদ, আশরাফ আলী, আলেফর খান, আয়াত আলী, সোহরাব উদ্দিন, রাইস উদ্দিন, সাগর মিয়া, মোহাম্মদ মারুফ, নসর মাস্টার, সুজানগরের আবদুর রশীদ চৌধুরী, আরিফুজ্জামান চৌধুরী, মতিউর রহমান মতি ও শাহজাহান মিয়া। একই জেলার তাহিরপুর উপজেলার ইকবাল হোসেন তালুকদার, ধর্মপাশার শফিকুল ইসলাম,তাহিরপুরের বাবুল মিয়া, আলী মর্তুজা প্রমুখ।
অনুপ্রবেশকারীদের নাম প্রকাশ পরবর্তী প্রকাশিত তালিকা নিয়ে এখন তোলপাড় সিলেট। অনেক উপজেলার নেতাকর্মী ফোন দিয়ে সিলেট প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, তালিকা যথাযথ হয়নি। তাদের দাবি-তালিকা প্রস্তুতকারীরা মাঠ পর্যায় থেকে নামগুলো সংগ্রহ করেননি। ফলে চিহ্নিত এবং অনুপ্রবেশকারী বলে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হওয়া অনেককেই যুক্ত করা হয়নি অনুপ্রবেশকারীর তালিকায়। আবার অনেকের নামের সাথে অনুপ্রবেশ শব্দের মিল পাচ্ছেন নেতা কর্মীরা।
এ বিষয়ে কুলাউড়ার ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, প্“রকাশিত তালিকা দেখে মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারিনি, কারণ আমার ইউনিয়নের কোন অনুপ্রবেশকারীর নাম এই তালিকায় নেই অথচ জামাত-বিএনপি হতে দলে যুক্ত হওয়া অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষমাতর প্রভাবে আমরা তৃণমূল ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা এলাকায় দাড়াতেই পারছিনা “