জুড়ীতে দুই যুগ পর হারানো জীবন ফিরে পেল ‘কামিনীগঞ্জ বাজার’
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৫৮:৫২,অপরাহ্ন ১৬ এপ্রিল ২০২০ | সংবাদটি ৩৬১ বার পঠিত
জুড়ী প্রতিনিধি : প্রায় দুইযুগ ধরে অবহেলিত থাকা মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কামিনীগঞ্জ লামাবাজার তাঁর হরানো জীবন ফিরে পেয়েছে। প্রায় দুউযুগ ধরে এ বাজার খালি রেখে উপজেলা শহরের রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে অবৈধ বাজার বসায় লামাবাজারটি পরিণত হয় মরুভূমিতে।
অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র বনিক কামিনীগঞ্জ বাজারের রাস্তা ও ফুটপাতের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে নির্ধারিত স্থানে বাজার ফিরিয়ে নিলেন। এতে একদিকে করোনা পরিস্থিতিতে বাজারের মানুষের শারিরীক দুরত্ব নিশ্চিত হয়েছে অন্যদিকে কামিনীগঞ্জবাজার তাঁর হারানো জীবন ফিরে পেয়েছে।
মৌলভীবাজারের জুুড়ী উপজেলার বৃহৎ বাজার কামিনীগঞ্জ লামাবাজার। ভারত থেকে নেমে আসা জুড়ী নদী ও তার শাখা কন্টিনালার তীরে গড়ে ওঠা শত বছরের পুরণো এ বাজারের অনেক অতীত ঐতিহ্য রয়েছে। সিলেট বিভাগসহ সারাদেশে বেশ পরিচিতিও রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এ বাজারের।
নদীপথের সুবাদে এক সময় এ বাজারে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশাল আকারের শতশত নৌকাযোগে বণিকরা মালামাল নিয়ে এসে কেনাবেচা করত। কালের আবর্তে নদী গুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় নৌ চলাচল কমতে থাকে। পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়ে নিত্য নতুন যান চলাচল শুরু হওয়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানে বাজার গড়ে উঠে। মার খেতে থাকে জুড়ীর ঐতিহ্যের বাহক সরকারি এ বাজারটি।
একদিকে উপজেলা শহরের ভবানীগঞ্জ বাজারে সড়ক ও জনপথের জায়গা ও ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠে অবৈধ কাঁচা বাজার অন্যদিকে জাঙ্গিরাই ত্রিমোহনী, কামিনীগঞ্জ বাজারের শিশুপার্ক চত্বর ও ডাকঘর সড়ক এলাকার ফুটপাত ও সড়ক দখল করে অবৈধ ভাবে কাঁচা বাজার বসানো হয়। যার ফলে শহরে ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে থাকত যানজট। ভোগান্তির শিকার হত বিদ্যালয়গামী হাজারো শিক্ষার্থী। অন্যদিকে বাজার ইজারাদাররা আর্থিক ক্ষতির শিকার হতেন।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও করোনা ভাইরাস কেন্দ্রিক জনসমাগম এড়াতে এগিয়ে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। গত ২৬ মার্চ কামিনীগঞ্জ বাজারের আনাচে কানাচে দখলকৃত কাঁচা বাজার তিনি উচ্ছেদ করলেও নির্ধারিত স্থানে কেহ যায়নি। এমতাবস্থায় গত বুধবার আবারও তিনি অভিযানে নামেন।
জুুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসের সরদার ও জায়ফরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মাছুম রেজার সহযোগিতায় ফুটপাত ও রাস্তার সকল কাঁচা বাজার উচ্ছেদ করে নির্ধারিত বাজারে স্থানান্থর করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সময়োপযোগী ও সাহসী এ ভূমিকার প্রশংসা করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, কামিনীগঞ্জ লামাবাজার তার যৌবন ফিরে পেয়েছে। বাজারটি যেন পুনরায় ভেঙ্গে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেই সাথে ভবানীগঞ্জ বাজারের অবৈধ কাঁচাবাজার উচ্ছেদ করে সরকারি বাজারে নিতে হবে।
জায়ফরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মাছুম রেজা বলেন, এ বাজারটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র বনিক বলেন, দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ দখলে থাকা ফুটপাত ও রাস্তার বাজার উচ্ছেদ করে নির্ধারিত স্থানে নিতে পারায় ভাল লাগছে। এখানে রয়েছে ভাল পরিবেশ, কিছু ছাউনিও রয়েছে। আরো কিছু ছাউনি করে দেয়া হবে। এ এলাকাবাসীর স্বপ্নপূরণ হোক।
ঐতিহ্যবাহী কামিনীগঞ্জ বাজার তার স্বরূপে প্রতিষ্টিত হোক। এটা বজায় রাখতে স্থানীয়দের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।