বড়লেখা প্রতিনিধি : ব্যবহারের অনুপযোগী জরাজীর্ণ ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে আদালতের কার্যক্রম। প্রায়ই ভবনের দেয়াল ও ছাদের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ভবনের দেয়াল ও ছাদের বিভিন্ন স্থানেও রয়েছে ফাটল। এছাড়া বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে মূল্যবান নথিপত্র ভিজে নষ্ট হচ্ছে।

গত শুক্রবার হাজতখানার সীমানা প্রাচীরও ধ্বসে পড়েছে। এতে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে হাজতখানাটি। যেকোনো সময় ভবনের দেয়াল ও ছাদ ধসে বড়ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।

এই হাল মৌলভীবাজারের বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (চৌকি আদালত) আদালতের। এই অবস্থায় দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আশির দশকে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে তৎকালীন সরকার উপজেলা আদালত পরিচালনার জন্য বড়লেখায় (আদালত) ভবন নির্মাণ করে। নব্বইয়ের দশকে এক সরকারী আদেশে উপজেলা আদালত প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের শেষ দিকে সরকার দেশের সীমান্তবর্তী ৯টি উপজেলায় চৌকি আদালত চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরপরই দীর্ঘদিন থেকে অরক্ষিত থাকা ভবনে বড়লেখা আদালতের কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন থেকে আদালত ভবনটি অনেকটা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায়ই জরাজীর্ণ ভবনের ছাদের ও দেয়ালের পলেস্তারা ভেঙে অনেকের ওপর পড়ছে। এমনকি বিচারকের এজলাসে বিচারকার্য চলাকালীন ছাদের পলেস্তোরা-খোয়া ভেঙে আইনজীবীদের মাথায় পড়ারও ঘটনা ঘটেছে। সামান্য মেরামত করেই কর্তৃপক্ষ দায় সেরেছে। গত ২৮ মে আদালত ভবনের হাজতখানার উত্তর দিকের প্রায় ৩০ ফুট সীমানা প্রাচীর ধ্বসে পড়ে। এতে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে আদালতহাজতখানাটি। আদালত পুলিশের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালত ভবনটি দীর্ঘদিন ধরেই জরাজীর্ণ। ঝুঁকি নিয়ে চলছে আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম। ভবনের দেয়াল, ছাদ, পিলার ও ভিমের বিভিন্ন স্থানে ফাটল রয়েছে। দেয়াল ও ছাদের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তোরা খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে বিচারাধীন মামলার মূল্যবান নথিপত্র ও জব্দকৃত আলামত নষ্ট হচ্ছে। ভবনটিতে রয়েছে আদালতের এপিপি কক্ষ, জিআরও কক্ষ, পুরুষ হাজতখানা ও মহিলা হাজতখানা। ভবন সংকটে মহিলা হাজতখানায় বসবাস করছেন আদালত স্টাফ ও পুলিশের সদস্যরা।

আদালতের সহকারী আইন কর্মকর্তা (এপিপি) গোপাল দত্ত বলেন, আদালত ভবনটি অনেক আগের। এটি অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। বিভিন্ন সময় আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের পলেস্তারা খড়ে পড়েছে। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সকলেই কাজ করতে হচ্ছে। নতুন আদালত ভবন নির্মাণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। তা নাহলে যেকোনো সময় বড়ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

আদালতের জেনারেল রেকর্ডিং কর্মকর্তা (জিআরও) এএসআই কামাল উদ্দিন মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, গত শুক্রবার আদালতের হাজতখানার সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছে। বিয়য়টি ম্যাজিস্ট্রেট স্যারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।