মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নে স্মার্ট কার্ড বিতরণকালে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের তিন নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজারের ৫নং আমল গ্রহণকারী আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ওই তিন নেতাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত কর্তৃক জেল হাজতে প্রেরণকৃত আসামীগন হলেন, রাউৎগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল জালাল বাবলু(বাবলু মহরি), তার ছোট ভাই জেবলু আহমদ ও তাদের ভাগ্নে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আলম চৌধুরী রুবেল।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলছিলো। ওইদিন বিকেলে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আলম চৌধুরী ওশফি চৌধুরী পলিট এর নেতৃত্বে বিতরণস্থল চৌধুরীবাজার মাদরাসায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এতে স্মার্ট কার্ড বিতরণের দায়িত্বে থাকা কুলাউড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার আহসান ইকবালসহ ৪ জন আহত হন। হামলাকালে দুটি কম্পিউটার ভাঙচুরসহ দেড় শতাধিক স্মার্টকার্ড হারিয়ে যায়।
ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার, হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগে শফি চৌধুরী পলিট কে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ঘটনার দিন রাতে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহসান ইকবাল নিজে বাদি হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা (নং ৩৩) করেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, চৌধুরী বাজার গাউছিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদরাসায় রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের ভোটরদের স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয় সকাল ৯টা থেকে। বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ রাউৎগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আলম চৌধুরী রুবেলের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের একটি সন্ত্রাসীদল লাঠিসোটা নিয়ে স্মার্টকার্ড বিতরণের কম্পিউটার সার্চিং রুমে প্রবেশ করে সিরিয়াল ভঙ্গ করে সবার আগে তাদের স্মার্টকার্ড দিতে হবে বলে জানায়। এসময় তারা উত্তেজিত হয়ে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করে। এসময় নির্বাচন কর্মকর্তা তাদের লাইনে দাঁড়িয়ে স্মার্টকার্ড সংগ্রহের অনুরোধ জানালে উল্টো তাঁর উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এসময় দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কর্মকর্তা আহসান ইকবাল, কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল ছাদেক মাছুম, উজ্জ্বল আহমদ ও দেলোয়ার হোসেন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলাকারীদের তান্ডবে দুটি ল্যাপটপ ভাঙচুর করে। এতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। দেড়শতাধিক স্মার্ট কার্ড হারিয়ে যায়।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইকবাল আহসান বলেন, ওই ঘটনায় জড়িতরা সরকারি কাজে বাধা প্রদান, হামলা ও ভাঙচুর করে। তাদের হামলার কারণে প্রায় দেড়শতাধিক স্মার্ট কার্ড হারিয়েছে।
কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল বলেন, স্থানীয় সূত্রে জানতে পেরেছি উচ্চ আদারতের জামিনে থাকা মো. আব্দুল জালাল বাবলু(বাবলু মহরি), জেবলু আহমদ ও মাহমুদ আলম চৌধুরী রুবেল নিম্ন আদালতে জামিন চাইতে আদালতে গেলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন। সূত্র-পূ্র্বপশ্চিম