কুলাউড়ায় এম.এ.গণি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ উপেক্ষিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪২:৫৮,অপরাহ্ন ২৭ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৫৫৭ বার পঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার এম.এ.গণি কলেজের লাগামহীন দূর্ণীতি অনিয়মের যেন কোন সমাপ্তি নেই। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের প্রতিটি আদেশকে তাচ্ছিল্য ভাবে অবজ্ঞা করতে করতে ঐ প্রতিষ্টানটি বেমালুম ভুলেই গেছে যে, তাদের উর্ধ্বতন কোন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তাইতো আবারো সিলেট শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনাকে পাত্তা না দিয়ে তাদের দৃস্টতা দেখালো কুলাউড়ার এম.গণি.কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সিলেট সূত্রে জানা যায়, জৈষ্ঠ্যতা লংঘন করে অনিয়মের মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে কুলাউড়ার এম.এ.গণি কলেজের ভাপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন কলেজে প্রতিষ্ঠাতার জামাতা শাহআলম সরকার। কলেজটির সর্বোচ্চ সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক ও কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুন নুরের আবেদনের প্রেক্ষিতে পত্র প্রাপ্তির ২মাসের মধ্যে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্য সম্পন্ন করার জন্য গত ২০/০৫/২০১৯তারিখে এম.এ.গণি কলেজের গভর্ণিংবডির সভাপতি ও সম্পাদককে নির্দেশনা পত্র জারি করেছিল সিলেট শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু পত্র ইস্যুর ৬মাস অতিক্রান্ত হলেও এ পর্যন্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের কোন কার্যক্রম গ্রহন করেনি কলেজটি। ফলশ্রুতিতে গত ১৬/১০/২০১৯ তারিখে এম,এ,গণি কলেজে কর্তৃপক্ষকে আবারো একটি নিদেশনা পত্র জারি করেছে সিলেট শিক্ষা বোর্ড। পত্রে উল্লেখ করা হয় যে, কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ইতিপূর্বে পত্র দেয়া হয়েছিল। এমতাবস্থায় অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহিত কার্যক্রম শিক্ষাবোর্ডকে জরুরী ভিত্তিতে অবহিতকরার জন্য নিরর্দেশনা রয়েছে উক্ত পত্রতে।
প্রসঙ্গত, বিগত ১৬বছর যাবত গোলাম সরওয়ার পাকি নামক এক অশিক্ষিত বিতর্কিত লোককে কলেজের গভর্ণিংবডির সভাপতির পদে বসিয়ে নিজেদের পছন্দের লোকদের নিয়ে কমিটি তৈরির মাধ্যমে নিয়োগ, পদোন্নতি,ভুমি জালিয়াতি,কলেজের ফান্ড আত্মসাৎ,জাল সনদধারীদের বেতন ভাতা প্রদান সহ অসংখ্য দূুর্নীতির কলেজটি সাথে জড়িয়ে আছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে সর্বত্র। এসব দূর্নীতির কারণে কলেজের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের বিভিন্ন রায়,শিক্ষা বোর্ডের অসংখ্য নির্দেশনা কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করছেনা প্রতিষ্টানের গভর্ণিংবডি। কলেজের সীমাহীন দূর্নীতির বলি হয়ে ইতিমধ্যে কলেজের পিওন হারুন মিয়াকে জীবন দিতে হয়েছে, কলেজের দু’জন সিনিয়র শিক্ষক মিথ্যা অভিযোগের খড়গে বহিষ্কারের তকমা মাথায় নিয়ে বিগত ৫বছর যাবত পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃসহ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন এবং আরো একজন শিক্ষক বহিষ্কার হওয়ার পথে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এক কথায় কলেজের অনিয়ম দূর্ণীতির বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই বহিষ্কার নামক অস্ত্র দিয়েই তা প্রতিহত করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক আব্দুন নুর বলেন, ‘কলেজের সর্বোচ্চ সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে আমাকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও সিলেট শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা থাকা সত্বেও তা পাত্তা দেয়নি কলেজের গভর্ণিং বডি। বরং উক্ত নির্দেশনাকে চ্যালেন্জ করে আমাকে মিথ্যা অভিযোগের তকমা দিয়ে বহিষ্কার করেছে কলেজের গভর্ণিংবডি। কলেজেটির অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য শিক্ষা বোর্ডের জারিকৃত আগর পত্রটি গায়েব করেছিল কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ২য় পত্রটি আমি গতকালই পেয়েছি। তবে বোর্ডের এবারের নির্দেশনাও মানবেনা কর্তপক্ষ, অতীত ইতিহাস তাই বলে।’
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহআলম সরকারের সাথে মোবাইল করলে তিনি ফোন রিসিভ করে মিডিয়ার ফোন বুঝতে পেরে মোবাইল কল কেটে দেন। পরে বারবার চেষ্টা করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।