পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি তোশাখানার দ্বিতীয় মামলায় খালাস চেয়ে যে আবেদন করেছিলেন, তা খারিজ করে দিয়েছেন পাকিস্তানের আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সামা টিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আদালতের এই রায়ের ফলে ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন সহজতর হলো এবং মামলার আইনি প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালীভাবে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।
তোশাখানা বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল ২০২১ সালে। অভিযোগ ওঠে যে, ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে ছাড়মূল্যে উপহার কিনে সেগুলো পরবর্তীতে বিক্রি করেছেন। এরপর ২০২২ সালে এ অপরাধে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ইমরানের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে দেয় এবং ঘোষণা দেয় যে, এ ধরনের আচরণের মাধ্যমে তিনি দুর্নীতির সাথে জড়িত হয়েছেন এবং সংসদ সদস্য হিসেবে বা কোনো সরকারি পদে দায়িত্ব পালনে অযোগ্য।
জিও নিউজের তথ্য অনুসারে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খান তোশাখানা থেকে ৫২টি উপহার গ্রহণ করেছিলেন, যা নিয়ম ভঙ্গ করে কম মূল্যে কিনে নেন এবং পরে সেগুলোর বেশিরভাগই বিক্রি করেন। উপহারগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপি বলে ধারণা করা হয়। এসব উপহার তিনি ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে, ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে তোশাখানা মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর একই মামলায় ইসলামাবাদের একটি আদালত তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ আনে।
গত মাসের শেষের দিকে প্রায় ৯ মাস কারাভোগের পর বুশরা বিবির জামিন মঞ্জুর করা হয়। তবে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইমরান খান কারাগারে আছেন। বর্তমানে ইমরান একাধিক মামলার সম্মুখীন, যার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও অন্তর্ভুক্ত।
ইমরান খান ও তার পরিবার শুরু থেকেই এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন। তাদের মতে, এসব মামলা ইমরানকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সাজানো হয়েছে। কারাগারে থেকেও ইমরান খান, যিনি একসময় একজন জনপ্রিয় ক্রিকেট তারকা ছিলেন, এখনো ব্যাপক জনপ্রিয়।