অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফারুকী নিয়ে বিতর্ক: প্রশ্ন তুললেন সারজিস
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শপথ নেওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম এ বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন।
সারজিসের মতে, ফারুকীর মতো ব্যক্তিরা কীভাবে উপদেষ্টা পরিষদে আসেন, তা নিয়ে বিস্মিত তিনি। তিনি বলেন, “যারা আন্দোলনের সময় নীরব ছিলেন, তাদের উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয়। তারা আন্দোলনের স্পিরিটকে কখনোই ধারণ করতে পারে না।”
সারজিস আরও উল্লেখ করেন, ফারুকী দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার নিকটবর্তী থাকার চেষ্টা করেছেন এবং সেই কারণে তোষামোদমূলক আচরণ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, বিগত আন্দোলনের সময় ফারুকী সরাসরি সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেননি। বরং ক্ষমতার ঘনিষ্ঠ হয়ে নিজের স্বার্থ রক্ষা করেছেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “কেউ একটি লাইন লিখে বা একটি ছবি তুলে তোষামোদ করতে পারে। কিন্তু আমরা যারা প্রকৃত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তাদের এভাবে উপেক্ষা করা ঠিক নয়। আমরা এমন কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে দেখতে চাই না, যারা নীরব থেকে নিজের গা বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।”
সারজিসের মতে, যারা আন্দোলনের সময় সৎ সাহস দেখিয়েছেন, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বের জন্য উপযুক্ত। তিনি বলেন, “আমাদের উচিত এমন মানুষদের নির্বাচিত করা, যারা আন্দোলনের স্পিরিট ধারণ করেছে এবং সামনেও সেই স্পিরিট বজায় রাখতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা সরাসরি রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থন জানিয়েছেন বা দেশের ভেতরে-বাইরে থেকে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, তাদেরই প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া উচিত।”
সারজিস এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, “আমরা সরকারের ভালো দিকগুলোকে প্রশংসা করব, কিন্তু সীমাবদ্ধতাগুলোকে অবশ্যই সরাসরি সমালোচনা করব। এমন একজন সাহসী প্রতিনিধি প্রয়োজন, যিনি সত্যিকারের জনমানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে দাঁড়াতে পারবেন।”
সারজিসের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বিষয়টি নিয়ে তাদের মতামত জানাচ্ছেন।