আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য সরাসরি সম্প্রচার নয়, তবে অডিও-ভিজ্যুয়াল রেকর্ডিং করে প্রচারের সুযোগ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি এ বিষয়ে বুধবার (২০ নভেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, “নতুন আইনে ট্রাইব্যুনাল চাইলে বিচারকার্যের নির্দিষ্ট অংশ অডিও-ভিজ্যুয়াল রেকর্ডিং করে প্রচার করতে পারবে। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয় এবং বিচার সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মর্যাদা, গোপনীয়তা, এবং অধিকারকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিচারপ্রক্রিয়াটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি আইন বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের অধিকতর অধিকার প্রদান করা হয়েছে, যা ১৯৭৩ সালের আইনের তুলনায় আরও উন্নত।”
নতুন আইনে সাক্ষ্যগ্রহণ এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, “সাক্ষীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে জবানবন্দি দিতে পারেন, সে জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
নতুন আইনে বিচারকার্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পর্যবেক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। ড. আসিফ নজরুল বলেন, “দেশি বা আন্তর্জাতিক যেকোনো মানবাধিকার সংস্থা চাইলে এই বিচারকার্য মনিটরিং করতে পারবে, যা বিচার শুদ্ধ ও সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে।”
আইন উপদেষ্টা জানান, সংশোধনী খসড়াটি বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়, মানবাধিকার সংগঠন, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ পর্যালোচনা করে প্রণয়ন করা হয়েছে।
“সংসদ ভেঙে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য বিদ্যমান আইনকে যুগোপযোগী করার প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় নিয়ে এই সংশোধনী আনা হয়েছে,” বলেন তিনি।