২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে হাইকোর্টের রায় রোববার

আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের রায় আগামী রোববার (১ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা হবে। হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ এ রায় প্রদান করবেন। বিষয়টি শনিবার (৩০ নভেম্বর) নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

মামলার প্রেক্ষাপট

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় অন্য ১১ জন আসামিকে।

২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মামলার রায়সহ প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়। একই সময়ে কারাবন্দি আসামিরা তাদের শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করেন।

আপিল শুনানির অগ্রগতি

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিচারপতি সহিদুল করিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আপিল শুনানি শুরু হয়। পরে বেঞ্চ পুনর্গঠিত হলে নতুন বেঞ্চে শুনানি পুনরায় শুরু হয়। সর্বশেষ ৩১ অক্টোবর থেকে আপিল শুনানি শুরু করে হাইকোর্ট বেঞ্চ।

বিচারিক আদালতের রায়ের সারাংশ

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা:

লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, মাওলানা তাজউদ্দিন, আবদুল মাজেদ ভাটসহ ১৯ জন। তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আদালত তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা:

তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জন। তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

অন্যান্য সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে দুই থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের ভূমিকা

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও শিশির মনির শুনানিতে অংশ নেন।

এই রায়ের গুরুত্ব

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা। রায়ের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটবে।