শিরোনাম

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনকে ফোন দেবেন ট্রাম্প

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৪ ঘন্টা আগে
ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করবেন। ট্রাম্প তার প্রস্তাবিত পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, তিনি যদি পুনরায় ক্ষমতায় আসেন, তবে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন এবং দ্রুত একটি সমাধান বের করবেন।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি এবং পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের বিবেচনায়। ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়া এবং এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে তিনি চিন্তিত।

তিনি বলেন, “আমি যদি ফের প্রেসিডেন্ট হই, তাহলে আমি প্রথমেই পুতিনের সঙ্গে কথা বলব। আমি জানি, দ্রুত একটি শান্তি চুক্তি অর্জন সম্ভব। আমি মনে করি, এমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব যা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সহায়ক হবে।”

এদিকে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন একটি আলোচনার সূচনা করেছে। ইউক্রেনের এই সংকটের মধ্যে, পশ্চিমা দেশগুলো যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো সদস্য দেশগুলো ইউক্রেনকে সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করছে, রাশিয়া তেমনি নিজেদের আগ্রাসী পদক্ষেপ চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, এবং যুদ্ধটি ইউরোপীয় অঞ্চলসহ সারা বিশ্বে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্পের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একজন নেতা হিসেবে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা জরুরি। তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি যদি আমরা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ না করি, তবে এটি আরও খারাপ হতে পারে। আমরা যদি সময়মতো পদক্ষেপ না নিই, তবে এই যুদ্ধের ভয়াবহতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

অন্যদিকে, ইউক্রেনের সরকার এবং পশ্চিমী দেশগুলোর নেতারা এখনও যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং তার ভূখণ্ড থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করতে তারা আন্তর্জাতিক সমর্থন অব্যাহত রাখবেন।

তবে ট্রাম্পের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আলোচিত হয়েছে এবং এটি কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বিশেষ করে, ট্রাম্পের পূর্ববর্তী প্রশাসনের সময়ে রাশিয়ার প্রতি তার সমর্থন এবং ‘রাশিয়া ইস্যু’ নিয়ে তার অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক ছিল। ট্রাম্পের এ ধরনের পদক্ষেপকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ মনে করছেন, কারণ তার প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করার চেষ্টা করেছিল, যা অনেকেই সমালোচনা করেছেন।

এরপরেও, ট্রাম্পের এই মন্তব্য তাকে পুনরায় নির্বাচনী প্রচারণায় সাহায্য করতে পারে। তার সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে, ট্রাম্পের নেতৃত্বে বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।

এদিকে, ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর অঙ্গীকার এবং রাশিয়ার নীতি নিয়ে বিশ্ব রাজনীতি ক্রমেই আরো জটিল হয়ে উঠছে। ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমী সহায়তা অব্যাহত থাকলেও, রাশিয়া তার অবস্থান থেকে পিছু হটতে রাজি নয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শান্তির জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ করলেও, রাশিয়া তাকে অগ্রহণযোগ্য দাবি করেছে।

এটি স্পষ্ট যে, এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য সবার আগে একটি দৃঢ় এবং কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন, যা বিশ্ব নেতারা একসাথে নিয়ে আসতে সক্ষম। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত এই পদক্ষেপে এক ধরনের নিরবচ্ছিন্ন আলোচনা এবং সরাসরি সংলাপের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাধান সম্ভব হতে পারে, তবে তা বাস্তবায়ন করা কতটা সম্ভব তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ।

বিশ্ব নেতারা যদি এ বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তবে ইউক্রেনের যুদ্ধের অবসান ঘটানো সম্ভব হতে পারে, কিন্তু এটি বিশ্ব রাজনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।