পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের এক নেতা বাংলাদেশ দখলের হুমকি দিয়ে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর), মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাস এমন বক্তব্য দেন। তার এই বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
টিংকু রহমান বিশ্বাস বলেন, “বাংলাদেশে যারা নিজেদের জাতির পিতাকে সম্মান করে না, তাদের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। আমি আগেও বলেছি, মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য সীমান্ত খুলে দিন, কোনো পুলিশ বা ফোর্স লাগবে না। পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমরা একাই বাংলাদেশ দখল করতে পারবে। আমাদের সংখ্যা এবং শক্তি যথেষ্ট।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ৩২ কোটি মুসলমান ভারতবর্ষে বাস করি। তবে গোটা ভারতবর্ষের প্রয়োজন নেই। শুধু পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরাই যথেষ্ট বাংলাদেশ দখলের জন্য।”
তৃণমূল নেতার এই বক্তব্যের পরদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলাপে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যারা সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যারা বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসতে চায়, তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।”
এদিকে, মমতার এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। বিরোধী দল বিজেপি এবং কংগ্রেস এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে।
বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করে বলেছেন, “ঢাকা থেকে ৩ লাখ হাতে টানা রিকশা কলকাতা দখলের জন্য রওনা দিয়েছে।” যদিও বাস্তবিকভাবে বাংলাদেশে হাতে টানা রিকশার কোনো অস্তিত্ব নেই।
এর আগেও মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রোধে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার এই প্রস্তাব ভারতীয় সংসদ এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা শশী থারুর মমতার মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, “শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে মমতার পর্যাপ্ত জ্ঞান রয়েছে কিনা, তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে।”
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদদের এমন বিতর্কিত মন্তব্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।