জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গাজায় সম্ভাব্য ‘জাতিগত নিধন’ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার সম্পর্কিত কমিটিতে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।
গুতেরেস বলেন, সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা অপরিহার্য, এবং কোনোভাবেই জাতিগত নিধন এড়ানো উচিত।
যদিও তিনি সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি, তবে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের জানান, গুতেরেসের বক্তব্যকে ট্রাম্পের নীতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখাটা যৌক্তিক।
গুতেরেস আরও বলেন, টেকসই শান্তি নিশ্চিত করতে হলে বাস্তবসম্মত ও স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে, যা দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে গাজাকে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদভাবে সহাবস্থানকারী সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার একমাত্র সমাধান।
একইদিন, তিনি জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গেও ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে মুখপাত্র ডুজারিক জানান।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি রিয়াদ মনসুর বলেন, “ফিলিস্তিন ছাড়া আমাদের আর কোনো দেশ নেই, আর গাজা এর অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা গাজা ছাড়ছি না এবং এমন কোনো শক্তি নেই যা ফিলিস্তিনিদের তাদের জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ করতে পারে।”
মনসুর আরও জানান, আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে আরব দেশগুলোর পক্ষ থেকে ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে একটি সমন্বিত বার্তা প্রদান করবেন বাদশাহ আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, “আমরা গাজাকে পুনর্গঠন করতে চাই, একত্রিত করতে চাই, এবং সকল দেশকে এই প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানাই। আমরা অন্য কোথাও যাওয়ার কথা ভাবছি না।”
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম এবং গাজা উপত্যকা নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল এই অঞ্চলগুলো দখল করেছিল, যা বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি প্রধান রাজনৈতিক ও মানবাধিকার ইস্যু।