গত মাসে পরীক্ষার্থীরা সচিবালয়ে প্রবেশ করে বিক্ষোভ ও ঘেরাও করলে এইচএসসি বা সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, এবারকার এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে জেএসসি এবং এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বর বিবেচনায় নিয়ে (বিষয় ম্যাপিং) ফলাফল প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
এই প্রক্রিয়ায় এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ৭৫ শতাংশ এবং জেএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ২৫ শতাংশ নম্বর ভিত্তিতে এইচএসসি বা সমমানের ফলাফল তৈরি করা হবে। এই দুই পরীক্ষার নম্বর যোগ করে যে ফলাফল আসবে, সেটিই হবে ওই পরীক্ষার্থীর এইচএসসি বা সমমানের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ফলাফল প্রকাশের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফলাফল প্রকাশের পদ্ধতি নিয়ে প্রস্তাব ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ফলাফল প্রস্তুত করে প্রকাশের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আগামী বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের বৈঠক ডাকা হয়েছে, যেখানে এবারের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পদ্ধতি চূড়ান্ত হবে।
এবারের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে কয়েক দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। শেষ পর্যন্ত ছয়টি পরীক্ষা ও ব্যবহারিক পরীক্ষা বাকি ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলন পরবর্তীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়, যার ফলে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে।
এরপর সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ১১ আগস্ট থেকে পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হবে। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি। শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দিন বিভিন্ন থানায় হামলা হওয়ায় সেসব জায়গায় রাখা প্রশ্নপত্রের ট্রাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
পরবর্তীতে ১১ আগস্টের পরিবর্তে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে তা বাতিল করা হয়। আন্দোলনকারীরা দাবি করে, চলমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া তাদের মানসিকভাবে চাপে ফেলছে। ফলে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।