ইসরাইলি কারাগারে কমপক্ষে ৫৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দি প্রাণ হারিয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার ওপর ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে বহু ফিলিস্তিনি কারাগারে মারা গেছেন।
মঙ্গলবার বন্দিদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন এ তথ্য জানিয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দা বলে জানানো হয়েছে। খবর আনাদোলুর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার ওপর ইসরাইলি হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি কারাগারে অন্তত ৫৯ ফিলিস্তিনি বন্দি মৃত্যুবরণ করেছেন।
প্যালেস্টিনিয়ান প্রিজনারস সোসাইটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৩৮ জনই গাজার বাসিন্দা। সংস্থাটি আরও অভিযোগ করেছে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ বন্দিদের মৃত্যুর তথ্য গোপন করছে।
বন্দি বিষয়ক কমিশন জানিয়েছে, গাজার বন্দি মুসাব হানি হানিয়াহ ইসরাইলি হেফাজতে মারা গেছেন। ৩৫ বছর বয়সী হানিয়াহকে ২০২৪ সালের ৩ মার্চ খান ইউনিস থেকে আটক করেছিল ইসরাইলি বাহিনী। তার পরিবারের দাবি, আটক হওয়ার আগে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন।
ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর ও গাজা দখলের পর থেকে ইসরাইলি কারাগারে কমপক্ষে ২৯৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দি প্রাণ হারিয়েছেন। বর্তমানে ইসরাইলের কারাগারগুলোতে অন্তত ১০ হাজার ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন। তবে এই পরিসংখ্যানে গাজা থেকে সম্প্রতি আটক হওয়া বন্দিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যাদের সংখ্যা হাজার হাজার হতে পারে।
১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, বন্দি বিনিময়, স্থায়ী শান্তি ও ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যাহারের লক্ষ্যে নেওয়া উদ্যোগ এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। জাতিসংঘ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরাইল গাজার ওপর সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় প্রায় ৪৮ হাজার ৩৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ।
জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলি আগ্রাসনের ফলে গাজার ৮৫ শতাংশ জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগও গঠন করা হয়েছে।