পাঁচ মাস আগে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর স্মৃতি এখনও মুছে না যেতেই আরেকটি ঘূর্ণাবর্তের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা গত ২৪ ঘণ্টায় শক্তি বৃদ্ধি করে গতকাল সোমবার বিকেলে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় এর কেন্দ্র ছিল প্রায় ১৫ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৯২ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার। লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় একই পথে চলার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, লঘুচাপটি আজ নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে আঘাত হানতে পারে। তাদের মতে, এটি আগের ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের মতো একই পথে আসতে পারে এবং উপকূলে উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস ঘটতে পারে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন স্বল্প নোটিশে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকার উপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ ২৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের উপর তীব্র আঘাত হানতে পারে। বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাতের সম্ভাবনা বেশি।