মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা সম্পর্কে মন্তব্য করার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম এবং অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন।
আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন, কিন্তু এই মামলার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতি ছিল না।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সিএমএম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১২৩ (ক) ধারায় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিন্দা এবং সার্বভৌমত্বের বিলোপ সমর্থনের অভিযোগে দায়ের করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক।
ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর বলেন, ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে তদন্তের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক, তবে দণ্ডবিধির ১২৩ (ক) ধারার অপরাধ আমলে নেয়ার জন্য সরকারের অনুমতি নেয়া জরুরি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনাসভায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আজকে বলা হয়, এত শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’ তার এ বক্তব্য পরদিন বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই বক্তব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অবমাননা করে এবং বঙ্গবন্ধুর অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এজন্য এটি দণ্ডবিধির ১২৩ (ক) ধারায় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।