প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর এবার তার চীন সফর নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের জন্য চীন সফরে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর এই দ্বিপক্ষীয় সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এর মধ্যে একটি যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়া প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের একটি ঋণ চুক্তি নিয়ে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে চীনের ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও ঢাকা সফর করছেন। গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি জানান, ৮ থেকে ১১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সম্ভাবনা বেশি। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় চীন অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সামনে প্রধানমন্ত্রীর যে সফরটি হতে যাচ্ছে, তাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা করছি। এই সফরের আগে লিউ জিয়ানচাও-এর আগমন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা এ সফরের দিকে তাকিয়ে আছি।” তবে, চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন, “সেটা পরে জানাব।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চার দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন ৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। ১০ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। একই দিন চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ঝাও লেজির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে প্রধানমন্ত্রীর। এ ছাড়া চীনের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, এবারের সফরে বাণিজ্য ও অর্থনীতি অগ্রাধিকার পাবে। ইতোমধ্যেই ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চীনের কাছ থেকে বাণিজ্য সহায়তা ও বাজেট সহায়তার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের পরপরই এবার চীন সফর নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের চীন সফরে যাচ্ছেন। এ সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে বাণিজ্য সহায়তা এবং বাজেট সহায়তার আওতায় ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ নিয়ের চিন্তা চলছে।
সফরের দ্বিতীয় দিন ৯ জুলাইতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। পরদিন ১০ জুলাইতে শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংসঙ্গে বৈঠক করবেন। একই দিন চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ঝাও লেজির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবেন। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে একাধিক বৈঠকের আয়োজন হবে চীনের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দশ বছরে চারবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। ২০১৪ সালে বেইজিংে, ২০১৬ সালে ঢাকায়, ২০১৯ সালে বেইজিংে এবং ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে তারা বৈঠকের মধ্যে অংশ নিয়েছেন। এবার চার দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে শেখ হাসিনা বেইজিংে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকায় আগত চীন কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাওর সঙ্গে নানা ইস্যুতে আলোচনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এই বৈঠকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে, রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে মিয়ানমারকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য চীনকে সহায়তা করার অনুরোধ করেছি। তারা যদি তাদের প্রত্যাবাসন শুরু করে, তাহলে আমরা তাদের ক্যাপাসিটিতে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করব।
এছাড়াও, বাংলাদেশ থেকে চীনকে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর আলোচনায় বাংলাদেশ চীনকে ওষুধ, সিরামিক এবং চামড়াজাত পণ্য আমদানি করতে বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ চীনে প্রতি বছরে এক বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে এবং ১৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্যোগের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশ এই প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর সহ বিভিন্ন দেশে ওষুধ রপ্তানি করে এবং তাদের চামড়া খাত অত্যন্ত ভালোভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চীন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের জন্য ব্রিকস এর সম্পৃক্ততা তৈরির জন্য চীনের সহায়তার কামনা করেছেন। হাছান মাহমুদ একাধিক বিষয়ে বলেছেন, যেমন ব্রিকস এর যে কোনো ফরম্যাটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ করতে যা হোক, সেটি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সিদ্ধান্তের অনুযায়ী হবে। তিনি ফিলিস্তিন সংঘাত এবং গাজা ইস্যুতে ও আলোচনা করেছেন, যেখানে মানবিক অধিকারের বিরুদ্ধে অপরাধ হচ্ছে।
তার সাথে এছাড়াও, বাংলাদেশ থেকে চীনে সিরামিক পণ্য ইউরোপ এবং আমেরিকায় রপ্তানির কথা বলেছেন। এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর আলোচনাও হয়েছে। বাংলাদেশ এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্রিকস সদস্য দেশগুলির সমর্থন এবং সহায়তার কামনা করেছে।