রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাতটি আবাসিক হলে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন পোড়ানোর অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, তিনিই এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। মঙ্গলবার তাকে ময়মনসিংহ থেকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীর নাম ফেরদৌস রহমান ফরিদ (২২), যিনি রাবির ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কুরআনে আগুন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে পালিয়ে যান এবং এরপর চাপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মিডিয়া উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আমির আলী হলের মুক্তমঞ্চ, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, শহীদ হবিবুর রহমান হল, মাদার বখস হল, মতিহার হল, সোহরাওয়ার্দী হল ও শেরে বাংলা একে ফজলুল হক হলের মসজিদে পবিত্র কুরআনের পোড়া অংশ পাওয়া যায়। এই ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মপ্রাণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্তে মতিহার থানা পুলিশের পাশাপাশি সিটিটিসি ও সাইবার ক্রাইম ইউনিট যুক্ত হয়। তদন্তের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রযুক্তিগত অনুসন্ধানের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, মঙ্গলবার ফেরদৌস রহমান ফরিদকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিকেলে রাজশাহীতে আনা হয়। বর্তমানে তাকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থী দাবি করেছেন যে তিনি মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন এবং সেই কারণেই তিনি এই কাজ করেছেন। তিনি একাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তবে তার বক্তব্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত পুলিশের তদন্তে ওই শিক্ষার্থীর কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।