শিরোনাম

বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস, সংসদে বিলের কপি ছিঁড়ে যা বললেন ওয়াইসি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৬ দিন আগে
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষে একটি বিতর্কিত আইন পাশ হয়েছে, যা মুসলিমদের দানকৃত ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চায়। ‘ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪’ নামে পরিচিত এই বিলটি বুধবার রাতে ব্যাপক বিতর্কের মধ্যেই পাশ হয়। এ সময় অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তিহাদুল মুসলিমীনের (এআইএমআইএম) সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি প্রতিবাদ জানিয়ে বিলের কপি ছিঁড়ে ফেলেন।

বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, ওয়াকফ বোর্ডে দুজন অমুসলিম সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হবে—যা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, মুসলমানদের ওয়াকফ সম্পত্তি—যার পরিমাণ প্রায় ৩৮ লাখ একর জমি—সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে এই বিলের মাধ্যমে।

বিল পাসের পর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সংসদে তীব্র ভাষায় এর বিরোধিতা করেন। তার বক্তব্য ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বিলটিকে সংবিধানের পরিপন্থী বলে দাবি করে বলেন, এর মাধ্যমে ভারতের সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা হয়েছে। ওয়াইসির আশঙ্কা, এই আইন কার্যকর হলে প্রশাসন ওয়াকফ সম্পত্তিকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনাগুলো বন্ধ করে দিতে পারে।

তিনি বলেন, “এই বিল মুসলিমদের আর্থিক উন্নয়ন নিশ্চিত করবে না বরং তাদের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুন্ন করবে। এটা স্পষ্টভাবে সংবিধানের ২৫ ও ২৬ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।”

সরকার অবশ্য দাবি করছে, নতুন আইনটি ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। তবে বিরোধী দল ও মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই মনে করছেন, এই বিলের মাধ্যমে মুসলমানদের ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার পথ তৈরি হচ্ছে।

বিলটি লোকসভায় ২৮৮টি ভোটে পাশ হয়, যেখানে বিপক্ষে ভোট দেন ২৩২ জন। এখন এটি রাজ্যসভায় তোলা হবে এবং সেখানে পাশ হলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

এই আইন কার্যকর হলে, মুসলমানদের দান করা মসজিদ, মাদ্রাসা, আশ্রয়কেন্দ্র এবং জমির মতো ওয়াকফ সম্পত্তির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বিরোধীদের। তাদের অভিযোগ, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সমান।