গাজার জনগণের স্থানান্তর পরিকল্পনা ও হামাসের প্রতিক্রিয়া
গাজার প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষকে মিসর ও জর্ডানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হামাসের পক্ষ থেকে বিশ্বের গাজা সমর্থকদের প্রতি অস্ত্র তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার (৩১ মার্চ) হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা মানবতাবিরোধী এবং এটি গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির শামিল। তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
এর আগে, গত রোববার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাস নেতাদের গাজা ছাড়ার প্রস্তাব দেন, তবে শর্ত দেন যে যুদ্ধের শেষের দিকে হামাসের সশস্ত্র বাহিনীকে নিরস্ত্র হতে হবে। হামাস গাজার প্রশাসন থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে ইচ্ছুক থাকলেও তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
নেতানিয়াহু জানান, ইসরাইল ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে, যার অধীনে গাজার ২.৪ মিলিয়ন বাসিন্দাকে অন্যান্য দেশে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে ট্রাম্প পরে বলেন যে তিনি কাউকে বাধ্য করতে চান না। মিসর, জর্ডান এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) এই বক্তব্যকে স্বাগত জানায়।
পরবর্তীতে, আরব দেশগুলো গাজার জনগণকে স্থানান্তর না করে সেখানে পুনর্গঠনের একটি বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তাব করে, যা ভবিষ্যতে রামাল্লাহ ভিত্তিক প্যালেস্টাইন অথরিটির অধীনে পরিচালিত হতে পারে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করেন যে গাজার বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় চলে যেতে চাইলে তাদের সহায়তা করতে একটি বিশেষ সংস্থা গঠন করা হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, গাজার বাসিন্দাদের তৃতীয় কোনো দেশে অভিবাসনের জন্য সহায়তা দেওয়ার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
গত ১৮ মার্চ, ইসরাইল গাজায় নতুন করে ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করে এবং স্থল অভিযান চালায়। গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষের পর এই হামলা আরও তীব্র হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১,০০১ জন নিহত হয়েছে।