ফিলিস্তিনের গাজায় আটক থাকা লিরি আলবাগ নামের এক ইসরায়েলি তরুণীর ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা। গতকাল শনিবার প্রকাশিত এই ভিডিওটি কবে ধারণ করা হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস কর্তৃক গাজায় নিয়ে যাওয়া জিম্মিদের নিয়ে প্রকাশিত ভিডিওগুলোর মধ্যে এটি সর্বশেষ।
১৯ বছর বয়সী লিরি ভিডিওতে জানান, তিনি ৪৫০ দিনের বেশি সময় ধরে বন্দি আছেন। তিন মিনিটের বেশি দৈর্ঘ্যের ভিডিওটির তারিখ উল্লেখ না থাকলেও এটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যে এই ভিডিও প্রকাশ করে ইসরায়েলি প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে হামাস।
লিরির বাবা-মা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “আপনার সন্তানরাও যদি এমন পরিস্থিতিতে থাকত, তবে আপনি কী করতেন? আমাদের সন্তানকে বাঁচাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন।”
তারা আরও বলেন, “লিরি জীবিত আছেন। তাকে জীবিত ফিরিয়ে আনা আপনার (নেতানিয়াহুর) ওপর নির্ভর করছে।”
লিরি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নজরদারি সৈনিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় তিনি নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটিতে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেদিন হামাসের আকস্মিক আক্রমণে ১৫ নজরদারি সৈন্য নিহত হন এবং লিরি সহ আরও ছয়জনকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১,২০৭ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে জিম্মিদের মধ্যে ৯৭ জন গাজায় বন্দি আছেন, যাদের মধ্যে ৩৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি।
গাজার ২.৩ মিলিয়ন বাসিন্দার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং উপত্যকার বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করতে প্রতিনিধি দলকে অনুমতি দিয়েছেন। তবে তিনি যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি এখনো প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছেন।